সমীরণ চক্রবর্তী
বাস্তুঘুঘু
আজকাল বাস্তুঘুঘুদের বেশ অহংকারী
মনে হয়,
কার ভিটেয় কারাই বা ঘুঘু সেজে
টহলদারী করছে
সেসব তাদের না জানলেও চলে।
ভাঙাবাড়ির উঠোন জানে
কত ঘুঘু রোদ মেখে দানা খেয়ে গেছে,
উঠোন এসব লিখতে জানে না
আর যদি লিখতে পারতো
তাহলে একটা দীর্ঘ উপন্যাস হত
যার প্রথম শব্দটি দীর্ঘশ্বাস আর
শেষটিও তাই...।
পুরুষ সিংহ
সব পুরুষের মাঝেই একটা সিংহ ঘুমিয়ে
থাকে
যার কেশরে লুকিয়ে থাকে অনেক অসহায়তা,
তবুও সিংহতো আর সে সব প্রকাশ্যে
আনবে না,
তার চেয়ে অসহায়তাগুলোকে না হয় লোকে
সিংহের অবজ্ঞা বলেই জানুক।
লোভ আর লালা
আমাদের অন্নপূর্ণা ছাত্রাবাসের
কেয়ারটেকার রঞ্জন স্যার
রোজ ধমকে বলতেন-
অবনী, ঘণ্টা
মেরে ভাত বেড়ে দাও
যারা সময়ে খাবে না,
তাদের ভাত খেয়ে যাক নেড়ি কুকুরে!
মনে পড়ে যায় প্যাভলভ সাহেবের কথা,
ঘণ্টা বাজে, খাবার
আসে, কুকুরের লালা ঝরে...
এভাবেই অভ্যস্থ হয় কিছু কুকুর,
কুকুর অভ্যাসের দাস,
মানুষও ব্যাতিক্রমী নয়...
হঠাৎ একদিন ঘণ্টা বাজলেও
খাবার এলো না,
সেদিন শিক্ষিত কুকুরেরা লালা
ঝরালেও
যারা কখনই জানে না
ঘণ্টা আর খাবারের সম্পর্ক কি,
তারা লালা ঝরালো না!
সব কুকুর শিক্ষিত নয়
সব কুকুর লোভী নয়
সব কুকুর লালা ঝরায় না।
রঞ্জন স্যার বুঝবে কি করে বলো
সে তো আর
অ্যানিমেল বিহেভিয়ার পড়েনি কখনও,
তবুও ভেজা গামছা বাঁধা পেটে
নিদ্রাহীন তক্তাপোষে শুয়ে ভাবে
অবনী,
আজ কি তবে ছেলেরা
রাতের খাবার খাবেনি...?
---------