বিশ্বজিৎ মাইতি
চিরঞ্জীব
১,
একবার
তারার খসে পড়া দেখতে দেখতে
আমার বন্ধু চিরঞ্জীব
খুব উত্তেজিত হয়ে উঠেছিল,
বুকের ওড়না খসে পড়া প্রেমিকা ভেবে
তীব্র আর্তনাদের সঙ্গে জুড়ে
দিয়েছিল
মিহিন প্রতিবাদের সুর।
কিন্তু প্রেমিকা তো দূরস্থান
প্রেমিকার পোষা মৌমাছিকে নিয়েই
সন্ধ্যের সময় স্টিমার ঘাটের দিকে
যাওয়া খুব মুস্কিল।
খসে পড়া তারাটিকে তাই
অপরিচিত কোনো যুবতী পরি
ভেবে
মজা নিতে চাইল সেই স্খলনের।
তারপর থেকেই
বেদনার নীল আভায় ছেয়ে আছে আকাশ,
তার ভেতর লাল পরির মুখ,
কখনো বা প্রসববেদনাকালীন উটের
গতিবিধি,,,
এইসব নিয়েই কোটি কল্পবর্ষ ধরে
কবিতা লিখে যাচ্ছে
আমার বন্ধু চিরঞ্জীব।
২,
চিরঞ্জীবের একটি ঘর আছে।
সেই ঘরের টেবিলে ফুলদানি রাখতে
পারে,
বই রাখতে পারে।
সেই ঘরের উঠোনে সে তুলসী গাছ
লাগাতে পারে,
বটের চারা লাগাতে পারে।
ঘরে হাওয়া ঢোকার জন্য
জানালা খুলে দিতে পারে,
ঘরে আলো না ঢুকতে দেওয়ার জন্য
জানালা বন্ধও রাখতে পারে।
শাদা পাথরের খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি রামকৃষ্ণের মূর্তি
বসাতে পারে পুবের বারান্দায়।
লাল পাথরের দুই স্তন পর্বতের মতো উঁচু
এই রকম নারীর মূর্তি ও বসাতে পারে।
কামে মুহ্যমান হতে পারে।
ভক্তিতে আপ্লুত হতে পারে
চিরঞ্জীব যা খুশি,তাই
করতে পারে ।
মুনিদের মতো মতিভ্রম ঘটাতে পারে।
রত্নাকরের মতো বোধিপ্রাপ্ত ও হতে
পারে।
চিরঞ্জীব,আমারইতো
বন্ধু।
৩.
যদুভট্টের গৃহিণীর মধ্যে
এক অক্ষৌহিনী জোনাকির উপলব্ধি
করে চিরঞ্জীব।
এমনকী তাঁর পরামর্শে স্নানসহচরী
নির্বাচন করাতেও
তার কোনো আপত্তিই নেই।
আকাশ ও মৃত্তিকার মধ্যে ,
লাঙ্গল ও লাজুক চাঁদের মধ্যে,
আলাদা কারো প্রতি পক্ষপাত দেখায় না চিরঞ্জীব।
চব্য, চোস্য,লেহ্য,পেয় যা পাওয়া যায়
তারই মধ্যে যদুভট্টের গৃহিণীর বর্তুল নাভিদেশ কল্পনা করে
আমারই মতো আনাড়ি কল্পনাবিলাসী
যদুভট্ট।