রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯

হাসিদা মুন


হাসিদা মুন

নিরঙ্কুশ অসহায়

তুমি এবং আমি এতো অসহায়
এতোই নিরঙ্কুশ অসহায়
বিশাল অক্ষমতার প্রান্তরের দুইপাশে
দু'জনে ফসিল হয়ে টিকে থাকি
কোন অসময়কে মেরে ফেলতে পারিনা
অস্বচ্ছলতাকে ছুঁড়ে ফেলতেও পারিনা
ছাই দিয়ে ধরে  পিছলে যাওয়া স্বাচ্ছন্দ্যকে
আঁটকে রাখতে চাই
পিছলে যায় নৈকট্য
পিছলে যায় নিয়তি
পিছলে যায় সহনীয়া স্বভাব
ক্ষোভে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয়
শতছিন্ন ভরা  ভবিতব্যকে

আমাদের একত্রে বসবাসের মতো ছাঁদ নেই
এক ছাঁদের নিচে থাকার মুচলেকা নেই
যদি ধনী হতাম অট্টালিকা নয়
একটা ছোট্ট কুটীর বানাতাম
পাতার ছাউনীর নিচে বসে পাশাপাশি
চাউনী দিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ছেয়ে নিতাম
আমাদের পাঁজরের ছাঁদের নিচে
অল্প একটু জায়গা সেখানে
এতো শত জিনিস  আটেনা
শুধু কিছুক্ষণ বুকের মাঝখানটাতে
চেপে ধরে রাখা যায়  একে অপরের মাথা
এছাড়া গর্ব করার মতো আমাদের তো আর তেমন কিছুই নেই ......








আমি কে

তোমার আনন্দে তোমার দুঃখে
তোমার বেদনায় তোমার দুশ্চিন্তায়
তোমার বিনির্মাণ তোমার আত্মায়
একনিষ্ঠ একাকার হয়ে
জলের অতলে ডুবিয়ে দিয়ে
আমি ভেসে উঠি
বলো আমি কে ?

তোমার  নীলে তোমার কালোতে
তোমার আকাশ তোমার মাটিতে
তোমার ভরাট শূন্যতায়
তোমার সুর সম্ভাবনায়
আমি বেজে উঠি
বলো হে  গায়ক পাখী
আমি কে ?

 তোমার ভাব তোমার ভক্তি
তোমার দায়ভার তোমার মুক্তি
তোমার রুদ্রাক্ষ  তোমার  পরাবাস্তব
তোমার  সব  পুনর্জন্মে
তোমার চলে যাওয়া
তোমার আগমনে
আমি আবার আসি
বলো নিমগ্ন সাথী

আমি কে?
অযুত  নিযুত ক্রোশের দূরত্ব ডিঙ্গিয়ে
সিগ্ধ  কোমল কঠোরতা  ছুঁয়ে
অন্তরের কুঠুরি  রঙে রাঙিয়ে
তোমার সকাল দুপুর  উথাল পাথাল করে
তোমার ভেতর বাহির আঁকড়ে  ধরে
খুব কাছে নিভৃতে সরে আসতে যাই 
তোমাতে অঞ্জলি  দিয়ে 
নিবিড় থেকে নিবিড়তায়
তোমাকে বোঝাতে  চাই
আমি কে ......







বারবার ফিরে যাই

বারবার ফিরে যাই
নাকি ফিরে আসি
এতোশত জানিনা
ফিরে যাই তোমার বাসগৃহে
নাকি ফিরে আসি তোমাতেই
কিছুটাক্ষণ তোমার থেকেই তুমিকে জিতে নেবো বলে
সকালের সিঁথি বেয়ে যত দ্রুত সময়ের চিবুক ছুঁয়ে যায়
অতলান্ত তলানো বুকভরা অর্ঘ নিয়ে
জানার আঙিনা ডিঙ্গিয়ে
সব জল ধুয়ে যায় দীঘল ক্ষুধার্ত সরল সৈকত
এই মাটি এই এঠেল বাঁধন ধরে থাকে

ফিরে যাই বারবার
নাকি ফিরে আসি
এতোশত জানিনা
মেঘেদের ডানপাশের ছায়ার ঝিমায় নগরী
জানালায় দেখি  সবাক ছবি
চোখ মেলে চেয়ে থাকে মায়াময় মুখ
চোখের পলকে পলকে কথা ঝরে পড়ে
যে চোখ বহুকাল রাতজাগা সকাল দেখে
দেখে সাতরঙা প্রিজমের রশ্মি
সপ্ত আসমান ভরা তারাদের গতি
দুপুরে ঘুঘুর বিলাপ
স্রোতের উজানে ভরা কাটালের  উজান সাগর

ফিরে যাই বারবার
নাকি ফিরে আসি
এতোশত জানিনা
এসো আমার আত্মায়
ছাপিয়ে দাও শতরং রামধনু
তুমি দিয়ে দেহে দেহাতীত আয়াত খোঁদাই করে দাও
আমাতে ঝিলমিলিয়ে ডুবে গেলে
আমি নেই হয়ে যাই
তুমি অনন্তের পথে থেকে যাও
সেখানের ফলকে একথা লিখে টাঙিয়ে দাও
আমি তুমি একাকার হলে  দু'য়েই   আমরা 'এক'  হয়ে উঠি  ...