তৈমুর খান
গোধূলির বার্তা আনে পাখি
চোখ ছলছল , জ্বর
এসেছে
অন্ধকারের কাঁথার ভেতর
কাঁপন ঢেকে রাখি ।
আলো ওষুধ ফিরিয়ে নাও
ব্যথার ভেতর বিষাদ মেখে
এখন ঘুমিয়ে থাকি ।
গোধূলির বার্তা আনে পাখি
পথের মাঝে দাঁড়িয়ে ছিল কেউ
তার হাতের চুড়ি বেজেছিল
শুধু একটি আস্ফালনের ঢেউ
দূরে কোথাও শাসাচ্ছিল ।
রক্তজবার বন পেরিয়ে হরিণ ছুটে গেল
হরিণকে আজ কোন বিকল্পে লিখি ?
পাঠশালাতে মধু ঝরে নাকো
শিকার শিকারি তাকিয়ে থাকে
তুলোর পোশাক উড়িয়ে দেয় লাল
শিমুলের বউ ।
ছলাৎ ছলাৎ স্মৃতির ভেতর ফাগুন মাস
আসে
কখন নদীর বালি খুঁড়ে জল তুলেছি
জলের ছায়ায় দেখেছি মেঘ ভাসে ।
অক্ষরবৃত্তে পাক খেয়েছি
কড়া নেড়ে বলেছি, দরজা
খোলো —
আমি এসেছি তোমার পুরুষ
যুবক অশ্ব, দুরন্ত
জমকালো !
সেসব কথা পুরোনো কোনো ঠোঙার ভেতর
পড়ে আছে চিৎকারে —
খোঁজে না কেউ ।
করাত নিয়ে চলেছে সব লোক
সময় কেটে, স্মৃতি
কেটে
নষ্ট কোনো পাহাড় চূড়ার দিকে....
সব শূন্যের ভেতর কিলবিল মাছ
বিবর্ণ মাঠের ঘাস ছিঁড়ে খেতে খেতে
অবিচ্ছিন্ন জন্তুগুলি ক্রমশ
অন্ধকারের দিকে চলে যায়
পাহাড় চূড়ায় মেঘ নামে
ডানাঅলা পাখির মতন মেঘগুলি
হরতন রুইতন হতে হতে ইস্কাবনের বিবি
পৃথিবীর প্রেমিকারা রোজ স্বপ্নে
ফিরে আসে
মেহগনির বনে আমাদের ছায়ার কি
মেরুদণ্ড ছিল ?
আজও তাকে খুঁজি
বিস্মৃত পথে অরণ্যের নিস্পৃহ গা
ছমছম
শুকনো পাতা ঝরে
চেতনার নিহিত বিশ্বাস থেকে
আমাদের ঘর-বসতের দুয়ার জানালায় সেই
চাঁদ খেলা করে
তার জ্যোৎস্না রঙের ওড়নায় কোনো
ভোরের সংবাদ নেই
শুধু শূন্যের ভেতর কিলবিল মাছ ঢেউ
তোলে
অন্ধকার চূড়া ঢেকে দিলে
আমাদের দুরন্ত ক্ষয় জাবর কাটে
আর পার্থিব জন্তুর গান শুনতে থাকে
কোনো নিরুক্ত স্তব্ধতায়
রাতকান্নায় ডুবে যেতে থাকি
রাতকান্নায় ডুবে যেতে থাকি
কোন সংকেতে ভেঙে পড়ে ঘুম ?
ঘুমের দরোজা খুলে ঢুকে পড়ে
তোলপাড়
এপ্রান্ত ওপ্রান্ত দৌড়
নিরাশ্রয় উদ্বেগ
সম্বল
এক কুয়োর নিকটে হারানো চাঁদ
ভাসে
মৃত চাঁদ গার্হস্থ্য প্রলেপে অঙ্গ
ঢাকা
আত্মহত্যার প্ররোচনায় অলৌকিক
জোনাকিরা ওড়ে
পৃথিবীতে এত নির্মম ভাষা থাকে ?
ভাষারা তিরের মতো ভেদ করে বাঁচার
নরম সময়গুলি
দুঃখের করাত অশ্রু মাখে
কেটে চলে
ব্যাপ্ত জীবন
শিয়রে সুগন্ধী ফুল ফোটে
ফুলে ফুলে নাচে সাপ
আগুনে হাত পোড়ে....