রবিবার, ২১ জুলাই, ২০১৯

গৌতম কুমার গুপ্ত


গৌতম কুমার গুপ্ত

কান্না

কতবার কান্না ভাসিয়ে দিয়েছি জলে
কতোবার চোখের বর্ণ করেছি গোপন
হনন করেছি নিজেকে কখনো মৃত্যুর অধিক

কতোবার কান্না রেখে এসেছি তোর ঠোঁটে
হাতে দিয়েছি মুক্তোবিন্দু ঝিনুকের হাহাকার
কতোবার বলেছি অভাগা এই দৃষ্টি বেঁধে রাখ

অশ্রুজলে কেঁপেছে হৃদয় কতোবার
তন্ময়ে ভেঙেছি আমার একাগ্র কতোবার
কতোবার ধ্বংস করেছি আত্ম গরিমা

স্থৈর্যে ধৈর্যে বাঁধ ভাঙে না আর জলীয় স্তর
জমাট বেঁধেছে লোনাজল ক্রমশঃ গহ্বরে
বরফে তার সুতীব্র অনুমান দার্ঢ্য অঙ্গীকারে






হা ডু ডু

বাইরে বেরোতেই দু এক পশলা পাপ ছুটে এলো
মা বাপ তুলে গালাগাল দিচ্ছে পরস্পর
ঠকিয়ে নিচ্ছে মাছের দাম আর ওজন
হলুদ আমের পশরায় সোনালী মাছি উড়ছে

কেউ পাঁচ হাজারী রঙীন থুতু ছড়াল ইচ্ছেমত
জন্মজয়ন্তীর মুখে
মিছিলে পাপঘ্ন পায়ের শব্দে বাকরুদ্ধ হল কথা

আমরা কেউ কারো মুখ দেখলাম না
ভালোমানুষী মুখোশে এড়িয়ে গেলাম
ব্যস্ত হলাম জলবায়ুর উষ্ণতায়
চেনা মুখে অচেনা কথার ঘেরাটোপে চুপ রইলাম

ওদিকে রাস্তা বাড়িয়ে নিচ্ছে ইচ্ছেমতো
পদক্ষেপ রাখার জায়গা কমে আসছে ক্রমশঃ
বৃক্ষহীন উপচ্ছায়া বেড়ে চলেছে শহর জুড়ে

বাড়ি ফিরে এসে ধূসর মুখ ধুয়ে ফেললাম
কৃতবিদ্য সাবানের ব্যক্তিগত ফেনায়
তারপর.......
দৈবমুখ ভান করে বসে রইলাম সোফায়

হাতের তালুতে অশ্রুপাত রক্তপাতের উল্কি
কত কি লেখা রইল ছেঁড়া কাগজের মতো দৈনিকে........






প্রহেলিকা

অবহেলা মুছে গেলে
লোকটি পোশাকাসীন হবে
উলঙ্গ তার নৃত্যমোহনী মুদ্রা
মাঝে মাঝে মুত্রত্যাগ থুৎকার বীর্যস্খলন

শ্মশ্রুগুম্ফ ব্যাদানে কুচ্ছিত হাসি
কান্না আর হাহাকার মেশানো
একটি তুখোড় ব্যাঙ্গের অ্যাবস্ট্রাকট্

অন্ধ বধির উন্মাদ বিকলাঙ্গ এক
ছাই ধূলো কাদার এই পীঠস্থানে
সাক্ষাৎ জন্মমৃত্যুর অনৈক্য প্রহেলিকা

লোকটি এখনও উলঙ্গ উন্মাদ
পোশাকের সূতো নেই সম্ভাবনাও নেই






সেলসম্যান

পাঁজর থেকে একটা ঘুণ ধরা হাড় বের করে
বললাম, এটা চলবে?
লালাভ বৃক্কের একটি শাখা দেখালাম
বললাম,চলবে ভাই?

চামড়ায় ঝলসে যাওয়া আগুনে
হাত রেখে হাঁক দিলাম
এটা কিন্তু সিজনড্

চোখের আঁশে দৃষ্টি মাইনাস
ফ্রিতে চোখের জল যতখুশী
পায়ে পায়ে এতগুলো বছর
সচল হিউমারাস ম্যারাথন গোড়ালি

নখে বেশ নিতে পারে ধূলোবালি এখনও
হাতের আঙুল সক্রিয় চড়চাপড়
কানে বধির শোনাবে গ্যারান্টি

শুধু ফেল কড়ি মাখো তেল







পরবাস

একটি সঙ্গতিহীন দরোজা জানালায়
ঝাপসা কাঁচের শ্লেষ
বারান্দায় হাঁ করা মগজ

উদ্বৃত্ত দেবে না গরীবী আসবাব
বিত্ত কই? আয়নায় দাঁড়াবে যদি !

হেঁটে যাই বাড়িটির হৃদয়ে;অভ্যাসের দায়
কেবলই কান্নাবসত
নষ্ট হয় সহস্র দিবসরজনী

গৃহরৌদ্র মজে গেছে মৃত শৈবালে