বনশ্রী রায় দাস
হতাশা
কোথায় চলে গেলে ঝরিয়ে দুএকফোঁটা
বৃষ্টি
পতঙ্গ ডানায় মেঘের ওড়াউড়ি একি
অনাসৃষ্টি ।
দীঘল চুলের রেখা সরিয়ে নোনা ঘাম
জলে
ভাঙনের সুর খোঁজে শ্যামল বরণ সে
ছেলে ।
কথা ছিল বর্ষার নূপুরে জড়িয়ে তুমুল ভিজবে
কাজল উষ্ণতায় অভিমান- বরফ কুচি গলবে।
রমণক্লান্ত পানকৌড়ি পালক খসিয়েছে
জলে
ময়ূর বনে প্রহর গুনছে
নাচবে পেখম তুলে ।
প্রিয় মুখ
অন্ধকার নিকষ হাঁটতে পারে মৃত্যু
জীবনানন্দের কবিতার নৈঃশব্দ্য
বুকের অতলে
ভেসে যায় ধানসিঁড়ি নদী।
দিগন্তের ঘামে ভেজা পৃথিবীর চাঁদ
কারণ খুঁজতে চায়নি কোন দিন ।
সিঁড়ি অদৃশ্য হয়ে যায় ধোঁয়া ধোঁয়া
নিতান্তই খড়কুটোর বেলা সমাগত ।
বাহিরে দাবদাহ কেমন সে প্রপাত-সুখ
ভিতর জলে সাঁতরে মরে কান্না রঙের প্রিয় মুখ ।
ক্যানভাস
শ্রাবণ বিকেলের এপিটাফে আঁকা পাখির
চোখ
কাঙ্খিত জয় পেতে বকের-ধ্যান
মেঘের ডোর বেলের কাঁটা.
জলের ছলাৎ বোঝে নদীর অরণ্য
কাঁপন ধরিয়ে টান-টান কলসির মুখ
যমুনা বিনোদন জানে বাঁশি ও নূপুর
মন্দ্র তালে আকাশের মল্লার বাজে
জোনাকি পাড়ায় আলোর শুভেচ্ছা নিয়ে
পাতায় জল চন্দন
জাগে একতারা সারারাত ।
নীল নক্ষত্র
প্রহরের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলাতে
পারো
তোমার কথার আগুনে অলীক উপন্যাস
ছায়া জীবন আমার
আয়নায় ধরে রাখতে চায় আয়ুক্ষয়ের ফুল
ছায়া বদলে গেলেই কম্পদিয়ে জ্বর আসে
তোমার হৃদয় মাঝে যুদ্ধের শঙ্খ
অথচ শিকল ভাঙার গান শুনতেই
রঙের খেলায় রাসায়নিক পরিবর্তন তুমি
ঘটিয়েছিলে।
দৃশ্য
ডালপালা থেকে ঝুরঝুর ঝুরি নামিয়ে
বটগাছ
ক্ষণিকের শুশ্রূষা খুঁজে নেয়
শ্রান্ত পথিক ।
পাখিগুলি দিন শেষে নীড়ে ফেরে
হুইসেল বাজিয়ে চলে যাচ্ছে শেষ মেচেদা লোকাল ।
বিরহের ভাষা ঢেউয়ের মতো
দাঁড়িয়ে
পৌরানিক ছাতিম বাতাসে তোমার গায়ের গন্ধ ভাসে
তবে কি মৌসুমি বসন্তপুর
গাঁয়ের মেয়ে?
বিরহের কবিতা বিভাগের কথায় অশ্রু
মুছবে এবার !!