মঞ্জিমা
গাঙ্গুলী
মুখ নিও মেঘের বদলে~
সে জানত না কী করে ফিরবে অশোকফুলে
সে শেখে নি ডানার উড়ান
পায়ে পায়ে হেঁটে সে ছুটে এসেছে বাড়ি
এসে দ্যাখে চেনে না সে বাড়ি
সে জানত না দিনে দিনে বদলে যেতে পারে
চেনা বা শোনা
তার মুখ তাদের জানলা গলে ঢুকে পড়ে
একবার শুধু বললো
মুখ নিও মেঘের বদলে।
ডুমুরতলা~
লালবাঁধে পাশ ফিরে ঘুমোতো একটা ডুমুরতলা
ঠিক এমন শীতে।
দূর অন্ধকার ভর করে ভেসে আসত
নলেন গুড়ের মোলায়েম ঘ্রাণ
ডুমুরতলা ঝোপ সরিয়ে হাত বাড়িয়ে
মেখে নিত গন্ধটা
সবারই একজন হারিয়ে যাওয়া মা থাকে
বড়ো হয়ে গেলে সবাই খোঁজে মাকেই।
পুডিং ~
আমার বেশ মনে পড়ে
একটি মেয়ে একটি ছাদ আর
যত্নে বানানো পুডিং।
রান্না শেখার শখ ছিল মেয়েটির
ইচ্ছে, বুদ্ধদেব গুহকে একদিন
নিজের হাতে
রান্না করে খাওয়াবে
ভালোবাসার মানুষটি বিয়ে হবার পরে
তাকে নিয়ে কখনো শান্তিনিকেতন যায় নি।
মেয়েটি আর পুডিং রান্না করে না।
তিল ~
একটা তিলকে ভালোবাসা যায়?
তার জন্য দেশ ছাড়া যায়?
প্রেমে পড়া আর ভালোবাসা ভিন্ন
প্রেমে পড়লে গলে যেতে পারো মোহে
ভালোবাসলে দেশ বা আয়না
সব সব সব ফেলে
যাওয়াটাই স্বাভাবিক জীবন।
নকশি কাঁথার মাস~
এক একটা মাস বড়ো বিষাক্ত।
হলুদ প্রজাপতি মেঘ আর
বিষণ্ণতা মাখামাখি হয়ে
ঝুপ করে ঝরে যায় উত্তরায়
মোহনার হাওয়া খেয়ে যুবকটি নিজেই
সোনাগলানো ওম গ্রাস করে
বাড়ি ফিরে কথা বলে পাখি পাখি
কথা বলে নকশি কাঁথা গায়ে হলুদের রঙ
ঘুম আসে আর ঘুম আসে না।