সুজিতকুমার
বিশ্বাস
মৎস্যপ্রহর
হৃদয়ে রয়েছে সেই গভীরের ক্ষত-
তুমি যে ঘুমিয়ে, সেখানে তুলোর
ওম;
নরম আঙুল অনুভবে সংযত
প্রতিকার চাই আর এক উপশম।
আমি সঙ্গীহীন ইতিহাস ইতিকথা-
শুধু বীতরাগ রূপমাঝে অলঙ্কার;
স্মৃতি বেঁচে আছে এক নিমেষ
সখ্যতা
জন্মের সময় দেখেছিলে একবার।
আমি যে নিবীর্য, বসন্তের
শীৎকারে-
মৎস্যপ্রহরে মাঝে মাঝে জেগে উঠি
নীলহ্রদ মাঝে দেখা হয় বারেবারে-
সেখানে নীরব আদরের লুটোপুটি।
চারিপাশে আজ
চারিপাশে আজ অন্য সে মুখ
অপরের অনুভূতি;
চারিপাশে আজ তরঙ্গরেখা
গোপন তুমি প্রিয়তি।
চুপি চুপি যেন ডাক দিয়ে যায়-
সেই অনন্তপ্রেম;
শব্দের মাঝে আলো কথা দিয়ে
আজ কী বা হারালেম।
কেঁপেছে পাতারা বর্ণমালায়
ভুলেছি যে মুর্খামি;
অহংকারের দাপট নেশায়-
নিজেকে ভুলেছি আমি।
চারিপাশে আজ প্রেম আর প্রেম
বহিছে প্রেমের ধারা;
সেই স্রোতে আজ ভাসায়েছি মন
সুখেতে আত্মহারা।
এলোকেশী মন
তুমি আর সেলফোন
ফেসবুকে চুপচাপ;
নদীপথে জলছবি
সাদা ঢেউ অভিশাপ।
নিকোটিন বিষহীন
শেষ ঘুম আলতায়;
মুখচোরা স্বপনেতে
রাত জেগে কবিতায়।
এলোকেশী মন সাথে
নীরবেতে বাজে বাঁশি;
নিঝঝুম চিৎকারে
ভাঙা পথ ভালোবাসি।
কবি তুমি
নিঃশব্দ সমুদ্র থেকে তীব্র
দিব্যদ্যুতি-
শব্দের মালায় গাঁথা, গূঢ় রূপরেখা;
উজ্জ্বলের সৃষ্টিকর্তা দেবরূপে
দেখা,
যেখানে লুকানো আছে তীব্র অনুভূতি
আনন্দে মগন তুমি প্রিয়
সৃষ্টিস্থিতি!
সময়ের মুখোমুখি চিরন্তন লেখা
এমনই প্রতিজ্ঞ তুমি কল্পরূপে
শেখা-
উদ্ভাসিত স্বপ্ননীল আলোকপ্রিয়তি।
কবি তুমি, প্রিয় কবি-
শব্দ ব্রহ্মসার
অলঙ্কারে ভাষাবোধে অনন্য সে ঋষি;
প্রকৃতি বুকেতে আসে দুঃখেতে
শ্রাবণ-
শব্দের আলোক সাথে মুখ মালিকার
ছন্দোবদ্ধ পদে তুমি সবার প্রেয়সি;
তোমার চোখের পরে বিষাদ প্লাবন।
প্রতিপাদ্য
আভিজাত্য অবেলায় ভরাটযৌবন-
দেখে দেখে খুশি আমি মূল
প্রতিপাদ্য;
মুহূর্তের চাহুনিতে সে আগুন অদ্য
শিরা মাঝে চোরাস্রোত সোমত্ত
শ্রাবণ!
আগুন ধরাতে পারে নিটোল গড়ন
দক্ষ শিকারির মনে সমর্পিত মদ্য-
বারবার ফিরে আসে লোলুপনৈবেদ্য
আমার চোখের 'পরে প্রেম
সমীরণ।
ভীষণ তৃষ্ণার পর শুধু অঙ্গীকার;
মূর্ত প্রতীক রূপেতে প্রণয়
অন্ধত্ব
প্রতীক্ষার রং মেশে অবশেষে মগ্ন!
দেখেছি রূপের ডালা ফুলশ্রদ্ধাসার
সহজ সরল পথে বলিষ্ঠ নিমিত্ত
আজিকে সার্থক বুঝি মহীয়সী
স্বপ্ন।