বিশ্বজিৎ
মাইতি
দাম্পত্য
আমি লাফিয়ে লাফিয়ে
এক গাছের ডাল থেকে অন্য গাছের
ডালে যাই,
এক গাছের ফল ছিঁড়ে
আর এক গাছের ডালে বসে খাই ।
অন্য পুরুষেরা সব গাছের নীচে বসে
থাকে চুপচাপ ,
গাছ থেকে পাকা ফল পড়লে তবে খায় ।
আমার বউ সবসময় কিচিরমিচির করে---
গানের কিচিরমিচির
হাসির কিচিরমিচির
রাগের কিচিরমিচির!
অন্য মেয়েরা কথাই বলে না প্রায়,
রাগেই না প্রায়
হাসেই না প্রায়!
বউয়ের মধ্যে একটি পাখি-ভাব আছে
আমি বলি ।
আমার মধ্যে একটি বাঁদুরে-স্বভাব
আছে
বউ বলে
সবকিছুই
সবকিছুই আকাশ থেকে ঝরে পড়ে,
ছোটবেলায় এমনটাই ভাবতাম।
চাঁদের আলো,
সূর্যের আলো,
বৃষ্টি
এমন কী বজ্রপাতও।
একটু বড় হতেই বুঝলাম
কিছু কিছু জিনিস মাটি ফুঁড়েও ওঠে,
গাছের চারা,
হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার ভগ্নাবশেষ
এমনকী কামের দেবতা বাক্কাসের
মন্দিরও ।
গাধা
আমার পোষা গাধাটি
অতিশয় সূক্ষ্মবুদ্ধিসম্পন্ন এবং
খুবই কল্পনাপ্রবণ
"নারকেলের
ভেতর জল আছে!"
হঠাৎ কীভাবে যেন আবিষ্কার করে
কাল্পনিক সেই জলের ভেতর দিয়ে
নিজের অতিশয় রঙিন ও শৌখিন
ডিঙি-নৌকাখানি
ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার আকুলতায়
উদ্বেল মাঝির মতো
আবেগে গান গেয়ে ওঠে
দীপ্ত রাগিনীতে ভর দিয়ে ।
সংকোচ
একটি ঐরাবত শুঁড়ে জল নিয়ে
ছুঁড়ে দিচ্ছে দিগন্তের দিকে---
জলের ফেটে পড়া উচ্ছ্বাসের ভেতর
তৈরি হচ্ছে অবলীলায় তোমার মুখ!
গড়ে ওঠা ও ভেঙে পড়ার মাঝখানের
সময়
রঙিন বুদবুদ হয়ে
জেগে থাকে দিগন্তে,চোখের পাতায়।
ক্যানভাসেই এঁকে ফেলা যায় এই
দৃশ্য,
কবিতায় লিখে ফেলা যায় এই
ভাবনা---
কিন্তু লোকজন আছে চারদিকে,
আত্মীয়-কুটুম্বজন আছে---
তোমার কপট রোষে উজ্জ্বল
চক্ষুদ্বয়ও আছে।
স্থির-অস্থির
জানালার পর্দা উড়ছে হাওয়ায়।
ঘরটি এক জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে
আছে।
স্থিরভাবে দাঁড়ানো মেয়েটির
চোখের পাতা কেঁপে যাচ্ছে
অস্থিরতায়।