সোমবার, ২১ জানুয়ারী, ২০১৯

তাপসী লাহা


তাপসী লাহা

স্মৃতি

স্মৃতিরা কি শরীর আঁকতে পারে!
অস্থি,মজ্জা তরলাভ সিক্ততা জুড়ে গিয়ে
আকারের সিদ্ধান্তে নিশ্চিত লেখে
অপরিণামী মুগ্ধতা।

টাস্কানির নৈসর্গিক সূর্যপতন---
ঘরের ছাতে ফুঁটে ওঠে চেনা সন্ধ্যার আদল,
সেখানে দেখা না দেখার ভেদবিন্দুরা হাওয়ায়
মিলিয়ে যায়।

নির্বিকল্প আসক্তিতে প্রতীক্ষা
পরের মুগ্ধতা বোধের সাতকাহন
নতুন স্মৃতিজন্মের
নামান্তর মাত্র।






ধুন

তারপর আবার নতুন করে
সব শুরুর যান্ত্রিক প্রচেষ্টায় ফিরে আসা।
শুন্যে অভ্যস্ত হাতদ্বয়কে
অতিরিক্ত দুটো পা হিসেবে
শক্তি সংগ্রহে লাগিয়ে
ধুলো ঝেড়ে সমদন্ডিক প্রত্যাবর্তন।

পড়ে যাওয়াটাই পরাজয়---এ সরল গঠনকে
সমীকরণ  হিসেবে কষে গেলে দেখা গেল
পড়া আর পড়ার পরে উঠতে চাওয়াটাই প্রচেষ্টা
যার  এক ধাপ আগে সাফল্য প্রগলভা প্রেয়সীর
ন্যায় বরমাল্য  হাতে তাতিয়ে দেয়
ভেতরের ঘুমন্ত জন্তটাকে।

অবাধ্য অনুশীলনের সতঃক্রম প্রয়াসে বুকের শেল্ফ
থেকে বেরিয়ে পড়ে উঠে দাড়ানোর ধুনটা।







আত্মপ্রতিকৃতি

এমন আত্মপ্রতিকৃতি ছুঁয়ে যাওয়া 
নদীক্রমের বাঁধানো ধাপ ভেঙে 
গহীনে মিশে থাকি বিগতের বুকে।

নিভৃতি চাই,সঙ্গ  চাই,যাপনের ধারাপাতেরা
পছন্দের গাছ থেকে অভুক্ত বা
আধখাওয়া মৌনতাকে উপড়ে নিয়ে গেছে।

নিঙড়ে নিঙড়ে  বের করে নেওয়া
দ্রাক্ষারসে ইক্ষুত্ব বোঝায় না,  তেমনি
ভরা গাঙে চিলের মতো নেমে আসি আপন হতে
চাওয়া রুহবীজ ছোঁ  মেরে  তুলে নেব বলে।






বাৎসল্য

ফাগুনের আগলহীন  প্রীতি মন টানেনি।

ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখি যখন ভালোবাসা কাঁধজোড়া কাঁদে।

কুঠিঘাট শোনে সে এক বয়স্থ ধৈর্য জল,

বেড়ে আনে ভরা জোয়ার কাছাকাছি,

দাড়িয়ে থাকে সব চেতনা মৃত্যুর  ঈষৎ  ঝিঁঝিঁ
অনিবিড়  হৃদ্যতায় ভেবে রাখে।

আমার সন্তানেরা হেটে যাবে প্রথম সড়গড়  মাইল।






হারানো নৌকা

মাঝদরিয়ায় হঠাৎ   হারিয়ে যাওয়া
         সেই   নৌকাটা!
এতো বছর পর অঘটনই বলতে পারি।

সতেরোটা বছর জারি থাকা
নিজের সাথে নিজের লড়াইটা---

প্রতিবার ডুব দিয়েও হাতের নাগালছাড়া,

এক তাল অসহ্য পাঁকে আটকে যাওয়া মুহুর্তরা।

হয়তো সেই পাঁকই তোমায় খবর দিলো আজ,

এতো বছর পর তাই কি এলে ফিরে।