শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

হামিদুল ইসলাম


হামিদুল ইসলাম

ভালোবাসা

গলার মালাটা দুহাতে ছিঁড়ি
ঘৃণা জন্ম নিচ্ছে প্রতিদিন
ঔরসজাত বৃক্ষের শেকড়ে
মিনরাশির উদ‍্যাম মন্থন
ফিরে আসি
 শৈশব কৈশোরের অস্থি রক্ত মজ্জার
ঘ্রাণ থেকে
প্রতিদিন আমার কৌমার্য খুন হচ্ছে
নিঃশব্দ কামরায়।

তোমাকে বলার সুযোগ হয় নি
সিগারেটের ধোঁয়াগুলো
ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে
সমস্ত আকাশ অক্সিজেনের অভাব
অসুস্থ ভালোবাসা
এসো স্নান করি যমুনায়
ধুয়ে নিই বিবস্ত্র শরীর।

অসম্ভব আগুনে পুড়ে
খাক হয়ে যাচ্ছে শরীরের নুন
ক্লান্তি পরস্পর
আমরা জ্বলছি
অক্সিজেন পুড়ছে
শরীরের হাড়গোড় রক্ত মাংস
আকাশে ছাইয়ের স্তুপ
আমরা ছায়া
তবু ভালোবাসার মৃত‍্যু নেই।
আগুনে পোড়ে না ভালোবাসা।






ভাত

আমার পৃথিবীকে
খুন করে আসলাম আমি এখনই
খুন করলাম আমার সংসার
ভালোবাসা
রক্তে ভেসে যাচ্ছে রাজপথ
ভেসে যাচ্ছে পৃথিব।

বড়ো অনুতাপ
আমার মনের গভীরে
ওপারে আকাশ নীল
ওখানে অনুতাপ নেই
ওখানেই যেতে চেয়েছিলাম
তাই এই আকাশটাকে
খুন করেছি নিজ হাতে।

হে ঈশ্বর আমাকে ক্ষমা করো
আমি প্রতিদিন পাহাড় ভেঙে
ভালোবাসার বৃক্ষ রোপন করি
তবু আমার শূন্য থালায়
লেগে থাকে ক্ষিধের দাগ
পারো যদি আমার পতায়
তুলে দাও একমুঠো গরম ভাত।

আমি আসবো ফিরে
সত‍্যকে জেনে নেবো
সাদা পাথরের চোখে
রক্তকে মুছে দেবো চিরতরে
আমার বুকে বসন্তের উৎসবে
পৃথিবী হবে চির জাগর
হৃদয়ে হৃদয়ে ফুটে উঠবে
ভালোবাসার কামরাঙা ফুল।






ছায়া

একসময় জলকে ভীষন ভয় করতাম
জলের মধ‍্যে নামলে
আমাকে টেনে ধরতো বিভৎস ছায়ারা
মাথার উপর পরিযায়ী পাখি
উড়ে যায় সমুদ্র ধানসিঁড়ি
পায়ে আংটা পরা
আমার পায়ের মতোই বন্ধন।

ছায়াগুলো ঘুরে বেড়াতো
আমার জানালার পাশে
কখনো আমার হাত টেনে ধরতো
ওপারে চাঁদ
চাঁদের পাহাড় ডিঙোই দেয়াল বরাবর
আমি কিশোরী
আমাকে ছুঁতে চায় ছায়া পুরুষের হাত।

এপারের পুরুষ মানুষগুলোও তাই
ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে আয়নার কাছে
আয়নায় দেখে আরশিনগর
ছায়াগুলো আমাকে নগ্ন করে।
গিলে খায় সমস্ত শরীর
গর্ভবতী ধানক্ষেত
আমি প্রতিদিন হেরে যাই প্রতিটি স্নায়ুযুদ্ধে।