শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

সুকান্ত মজুমদার


সুকান্ত মজুমদার

ইচ্ছে মৃত্যু

অহংকারের বর্মে একটা ছেদ
দেখতে নাপাওয়া সেই অহংকার!
এ গতি আজ ভিন গ্রহের
ধুলো ওড়নোর অধিকার রাখে -
কারণ অকারণে বাকযুদ্ধে
বারুদ ছেড়ে পরমাণুর গন্ধ মাখে।
উন্নত মস্তিষ্ক নিংড়ে জঙ্গল মুক্ত
পৃথিবীতে কৃত্রিম অক্সিজেন চাইছি
ঘরে বসে শীতল আরামে চোখবুজে
নেত্র পল্লবে প্রসাধনী রোগ মাখছি।
অজেয় সত্তায় ফলক হিসেবে
আত্মগরীমা মহামারীর মোকাবিলাতে
উৎসুক হয়ে দিন গুনছি -
মুক মুখে মুখোশ লাগিয়ে দুজনের
দূরত্ব চির স্থীর করে আমরা
উল্লাসিত আত্মরক্ষায় অচেনা গ্রহে
যে যার মত ছন্নছাড়া অস্পৃশ্যতা
ধারণ করে নিজেকে বিশেষ করেছি -
সত্যি আমরা অজেয় হয়ত প্রায় অমর
অনেকদিন বাঁচতে শিখেছি
তাই দুঃখটা বড্ড ফিকে মনে হচ্ছে,
মৃত্যুগুলো আজ আমাদের ইচ্ছের
কিভাবে সবাই একসাথে মরা যায়
অশ্রহীন মৃত্যুকে প্রগতিশীল উন্মত্ততায়
কেমনে আমাদের ক্রীড়াশৈলী করা যায়
তারি মহড়া দিচ্ছি, এ আর এমন কি?
       






বিস্মৃতির যমুনাতে

অতিসাধারণ তুমি সেই কব্বেকার
জঠোর কেন্দ্রিক সভ্যতার আবর্তে
এখনও ভন ভন করে উড়ছো,
তোমার ঘর্মাক্ত শরীর
শেষ নাগের আদলে নতুন পৃথিবীর
ভারে ক্লান্ত, তুমি জাননা -
তাই একটু সাহায্যের জন্য কপট
মুখ গুলোর দিকে ফ্যালফ্যাল করে চাইছ
তোমাকে নিয়েইতো আমাদের
পড়া পড়া খেলা,বহু বিভাজিত
মসনদের বারান্দায় বসে আত্মজীবনী
তৈরি করা, তুমি অবশ্যই ব্রাত্য এখানে।
তুমি সেকালে একালেও নদীর
নিম্নগতি হয়ে সব আবর্জনা বয়েই গেলে
যা তোমার অনাবিষ্কৃত অহংকার।

আনমনা আত্মসুখী পথিক আমি
পথ সন্মুখে চায় নিরবধি নিজ গন্তব্যে
প্রতি পদক্ষেপ পথের রূপকার তুমির
অসহ জীবনের,আব্রুহীন অস্তিত্বের
আর ক্ষুধার্ত সংগ্রামের অবসন্ন দেহকে
আমার আমোদের জোৎস্না দেহে
বিস্মৃতির যমুনায় লখিন্দরের মত ভাসায় -
সঙ্গে একরাশ অবজ্ঞা, অবহেলা।
এভাবেই প্রতি প্রহরে জীবন নিয়ে
আবার ফিরে আস নগর সভ্যতার ভয়ঙ্কর
যন্ত্রমানবের সুখ বিলাসের জঙ্গলে,
নিরাপত্তা হীন ও জীবন জিজ্ঞাসার
নিরুত্তর প্রবাহে ভেসে যেতে -
কঠিন মাটির বুকে আদ্রতা হয়ে
ফসল ফলানো মত্ততায় মসগুল হয়ে
অক্ষরহীন সংলাপে বিরল মহাকাব্যের
কোদাল - কাস্তে কাঁধে নিয়ে, 
সেই তুমি আর এই আমি,
তোমার দখলদার অধিকারী স্বামী।






এ সময়

এইতো বেশ কাটছে, অনাহার ক্লিষ্ট
আন্তপ্রজাতির মুখ আর সম্মিলিত
পরিযায়ী পাখিদের জীবন বিমুখ
বেঁচে থাকবার উদ্বিগ্নে,
সে সময় হয়ত খুব নিকট -
যেখানে তোমার আমার উত্তুঙ্গ মন
কেউ কাউকে ডেকেও পাবেনা
সমাজ ডুবে রয়েছে যেন নিরপেক্ষতায়
প্রাকৃতিক যুদ্ধের অনাড়ম্বরে -
শ্রাবণ ধারায় ঘোষিত শীতল ছোঁয়া
উদ্যায়ী হবে ঘনঘোর ভিন্ন অম্বরে।
জানালার এপারেই অনেক নাবলা
কথা প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ হয়ে
আমাদের সম্পর্কের ইতিহাস লিখছে,
সুখ দুঃখের আড়ালে আগাছার ন্যায়
অনুতাপ একাকীত্বের বাগিচা গড়ছে।
আমাদের সে নাস্তিক,
নির্ভীক অহমিকার সুদীর্ঘ দর্প-মাস্তল
যৌক্তিক আস্তরণে
মাঝ দরীয়ায় চীতপাত,
গভীরতা মাপছে।