সমর সুর
তৃষ্ণা
বেশ খানিকটা সূচনার
পর
অবশেষে আঁচল সরিয়ে
চাঁদ উঠল দোতালার
ঘরে।
ভাবখানা এমন
মনে হয় চেয়েছি তোমার
বিছানা,
লুকানো গুপ্তধন, রান্নাঘর।
না হয় একটু হেঁটে
যেতাম
যে পথ ধরে গিয়েছেন
জীবনানন্দ।
অসময়ে রাস্তা জুড়ে
ছড়িয়ে আছে কৃষ্ণচূড়া
ট্রাম চলে যায়
গোধূলির দিকে।
অনিকেত পাখি এখনও
মেতে আছে
প্রণয়ের গানে।
তৃষ্ণার্ত উটের মতো
সারা শহর
ঘুরে বেড়িয়েছি
রাত্রির অপেক্ষায়।
বলেছিলে গভীর
রাত্রিতে
তুমি দেবে গোপন
কুঁয়ো।
কি এমন চেয়েছি তোমার
কাছে
এই মধ্যরাতে আঁচল
খসে
চাঁদ পড়ে গেল কুঁয়োর
ভিতর।
প্রচন্ড তৃষ্ণা নিয়ে
ফিরে আসি
যে পথে ফিরে গিয়েছেন
স্বয়ং জীবনানন্দ।
বাবার কাছে
যখনই মন খারাপ লাগে
বাবার কাছে এসে
দাঁড়াই
কতবার বুঝিয়ে ছিলেন, শুনিনি
বাবার চোখ থেকে জল
পড়ে ।
আবার শীতের দিন এল
পাশের বাড়ির ছাদ
ভরে আছে চন্দ্রমল্লিকায়।
তোমার মেয়ে তোমারই
মতো শিশির ভেজা শান্ত।
ভাল লাগে যখন দেখতে
পাই আজও শাড়ি পরে
কলেজ যাচ্ছে মেয়েরা।
বাবা যদি বেঁচে
থাকতেন ভীষন খুশি হতেন।
ইচ্ছে ছিল বাবাকে
এনে দেব
একটা সত্যিকারের
জিরাফ
ঘরের ভিতর ঘুরে
বেড়াবে বাবার সাথে
যখন দেখি ভরদুপুরে
নিখিল বাবুর ছেলে আজ
তার বাবার জন্য
শীতের পোশাক কিনে বাড়ি যাচ্ছে ।
বাবার চোখ থেকে নামে
নিম্নলিখিত রাত্রি ।
রামবাবু
বহুদিন পর
ছেলেবেলার বন্ধুদের
সঙ্গে দেখা হল
সবাই ব্যস্ত আছে
সংসার ও ছেলেমেয়ে নিয়ে
অসুখের কথা শুনতে
এখন আর ভাল লাগে না।
রামবাবুই এখন ভরসা।
একা একাই রয়েছেন বেশ
বহাল তবিয়তে।
স্ত্রী বিয়োগের পর
তিনি এখন স্বাবলম্বী হয়েছেন
সবকিছু এখন নিজের
হাতেই সামলাচ্ছেন।
ফুল ফোটার শব্দ টের
পাই
পাশের বাড়ির দোতলায়
আজ কিসের উৎসব
হুইস্কির ঘ্রাণে
ভেসে যাচ্ছে শান্ত বেডরুম।
নিচু হয়ে নেমে আসে
সব গ্রহ নক্ষত্র করবীর ঝোপে।
আমিই শুধু জেগে আছি
সারারাত একা
বন্ধুদের সুসংবাদ
শুনবো বলে।