শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল


লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল   

স্নায়ুকোশ

ক্রমশ প্রলয়ের মতো  কালো হয়ে যাচ্ছি 

চাষিটি কোঁকড়াচুলো,  ফাটা গোড়ালি  মাটির রং নিয়ে উর্বরতার কথা বলে যায়। জমিনের বুক ছুঁয়ে ঈশান বাতাসের বেজে যায় জোয়ানি, চিৎকার করছে গ্রামের নাম - শিবচক অথবা মুরারিচক , প্রশাখাশিহরণ  ঘ্রাণ নিয়ে বেজে উঠি আমি তারই মাঝে একা একটি শ্যামলা মেঘে আমি কখনোই ফরসা হলাম না , নির্জন নীল পাড় আর কাকের দলের সাথে পরিস্কার করে চলেছি ভাগাড় , সরষে ফুলে কেউ কেউ ঢালছে কীটনাশক  - কারণবশত বটগাছের নিচে শহিদবেদির অক্ষর মুছে যায়    
রাত বুকে নিয়ে মহাশূন্য  নাগরী  আমার  - ভেজাতে পারলে কই

না হয় একত্রিত রোদের আগুনে আরো পুড়িয়ে দাও আমার ত্বক ; চামড়া    







কোকিল

কীর্তনগানের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে কয়েকটা কোকিল ডেকে ওঠে

জেগে উঠে দেখি সমস্ত ভক্তবৃন্দরা ভ্রমণক্লান্ত, ক্ষুৎকাতর একা আর নিঃসহায়  -মাথার উপর মৌমাছিরা উড়ে বেড়াচ্ছে ঢেউ খেলানো দিনরাতে, উচ্ছ্বাসিত স্রোতের নিশ্বাসে মেঘ টপকানো চাঁদ,  জিহ্বাকে করছে আরও তৃষাতুর-করুণ 

কীর্তনীয়া  বিলাতে থাকে বসন্ত - খোল করতালে বেগবতী - ফুটফুটে শিমুল রঙে সাজিয়েছে পথ   
কয়েকটি চিতা থেকে ধোঁয়া উড়ছে, কোন ফাঁকে তার স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ  কামনামদির -এবার রবিধানের কুসুম এসেছে বেশ 

রাধার কখনো ফেসপ্যাকে থাকে জানা ছিল না  - তবু আলপথ দেখি কালো মেয়ের, বাঁকে তার ফরসা গোড়ালি। দাগে দাগে কাদামাটির লাবণ্য  - ভরা পূর্ণিমায় ভাসতে ভাসতে বনমালীপুর 







নাভিপদ্ম

ঈশান কোনে মাথা রেখে পরিশুদ্ধ বাতাস চেয়েছিলাম  

বিছানার কাছে এগিয়ে আসে জানালা  -   এই ভাঁজময় কানে কেবল পতঙ্গের অস্ফুট পাখার শব্দ- কার যে  হাতছানি  - ঝিঁঝিঁ প্রলাপের সাথে রেলিঙের মরিচা খসে পড়ে  - টান পড়ে চাঁদের তোরঙ্গে-    

চোখ বন্ধ করে কপালকে করি সাদা পাতা  - ঢেউ আছাড় খাচ্ছে ধর্মপোতায়
আয়,  নীরবতা নিয়ে যা  -

কবিতার বইগুলো উইপোকা খায়  - সূচিপত্র নিয়ে গান বাঁধে ঝরাপাতা , উদাসীন সন্ধের পাশে  অপলক চোখ - চলে যায় পাখিদের শান্ত চলাচল  - বৃক্ষেরা ঝুঁকে আছে নিঃসঙ্গতার দিকে, তার চারদিকে ডুবে যাচ্ছে ঈশ্বর

নাভিতে আলো রাখা দায়; আমি আকাশ হয়ে যাই