শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

অনুপ মণ্ডল


অনুপ মণ্ডল

কলাবতী জানে

পিঠে চাঁদ বেঁধে জঙ্গলপথে বসে আছে নারী
একজন নারী দুজন নারী তিনজন নারী
সব নারীর পিঠেই কোমল ব‍্যথা;সব নারীর পিঠেই ভ্রষ্ট চাঁদ
চাঁদ ভালোবাসে নারী,ব‍্যথা ভালোবেসে নারী রমণী হয়

জলের উৎস সন্ধানে পর্বতের দিকের দরজা আমি
হাট করে খোলাই রেখেছিলাম
ওপারে তুমুল বৃষ্টি।গড়িয়ে নামছে পাহাড়ের ছোটছোট মুকুল
ওরা পাহাড় হবে একদিন।পর্বত হবে।গমক ঠুংরি গজল
বাতাসের বুক থেকে একটা দুটো করে
সবকটা বোতাম খুলে যায়
রোমশ বুকে তৃষাতুর মেঘ।ষোলোকলায় রাগমোচন হয়
কলাবতী জানে

উদর আর জঠরের ধর্ম এক নয়
ওহে কান্নাকাটি ওহে বসতবাটি তুমি শোন,তুমি শোন-ও
গালে হাত,ভেবেভেবে আকুল হচ্ছে সাঁকোর দু'পাশে দুই পাড়






রিগরমর্টিস

মুঠো খুলে গেল;প্রসারিত তালুর ওপর তিনজন নারী
একজন শুয়ে একজন বসে একজন দাঁড়িয়ে
যুদ্ধের ফলাফল না জেনেই
                                 যুদ্ধে মেতে ছিল ওরা
একটু পরেই আকাশে সন্ধ‍্যাতারা দেখা দিলে
আঙুলের ডগায় ডগায় শুরু হয়ে যাবে কনসার্ট
শুরু হয়ে যাবে নাচগান।তিনজন নারী ছজন হবে
ঝিরিঝিরি হাওয়ায় ঝরবে দু'পাঁচটা বিচ্ছিরি পাতাও
চলবে সেই মধ‍্যরাত অব্দি;তারপর
সন্ধ‍্যাতারা শুকতারা হয়ে ফুটতে শুরু করলে
স্তিমিত হয়ে আসবে সকল বাদ‍্য সকল যন্ত্রণা
আবারো মুষ্ঠিবদ্ধ হয়ে আসবে হাত
বিছানার বাসি চাদর বদলাতে এসে
আমার সুশ্রুষাকারিনী আমার তিন পুরুষের সুপ্তযোনি
রাতবিরেতের শরিকি সীমানায় দাঁড়িয়েদাঁড়িয়ে দেখবে
মরে গিয়েও আজও আমি মরি নাই
মুষ্ঠিবদ্ধ হাত।গড়িয়েগড়িয়ে নামছে ঘাম অথবা কান্না



               


জামাকাপড়

পৃথিবীর কড়িবরগায় কোনও ছেদ ছিল কি?না,তবু আমি
তাদের ভেতর থেকে কাঠের কণ্ঠস্বর চুরি করে আনি
ক্লান্ত আমি
সন্ধে হওয়ার আগে
সূর্যের ছায়ায় মরা আধুলি ডুবিয়ে দিনের উষ্ণতা মাপি
আমাকে সে প্রতীক্ষিত শয়তান ভেবে বসে আছে
ফেলে আসা বাঁকগুলো সব
বিড়ালের মতো লাফ দিয়ে একে একে সোজা হয়ে যাচ্ছে
ব‍্যর্থ ঘোড়ার নাল খুলে পড়ে থাকছে এখানে ওখানে

তরলতা ছাড়া জলের
এই মুহূর্তে আর কোনও মর্ম থাকেনা জানি
ঘোড়া বললে ঘোড়া চাঁদ বললেও সে চাঁদ
চাঁদ থেকেও ঘোড়ারা ছুটে আসে
আমাদের এই পৃথিবীতে
কিছু কান্নার জল সবসময় মিশে থাকে মেয়েমানুষের রক্তে

সোজা হওয়ার আগে বাঁকগুলোতে কখনোসখনো আমি
চাঁদের অমীমাংসিত খোলা জামাকাপড় পড়ে থাকতে দেখেছি