শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

শ্রাবণী গুপ্ত


শ্রাবণী গুপ্ত

এসব কিছু না ঘটলে

এসব কিছু না ঘটলে
আমি বসে থাকতাম কার্শিয়াং পাহাড়ে
হয়তোবা এখনো ঘুম থেকে উঠতাম না
কাপড় কাচতাম না হাতও ...
মখমলি বাতাসে প্রিয় প্রেমিকের কাঁধ ধরে
ঝুলে থাকতাম ডালিম ফুলের মতন
এসব কিছু না ঘটলে
আমার বাজারের ফর্দে নতুনের সমাগম হতো না
আমি পাহাড়ের আলগা পাথরটার ওপর
নির্দ্বিধায় এলিয়ে দিতাম বাদামী পোশাক
কোন এক পাহাড়ি মেয়ের কাছে চেয়ে নিতাম
ঘুমপাড়ানিয়া গান
এসব কিছু না ঘটলে জীবনটা কেমন হতো
এরকম কিছু ভাবতে ভাবতেই
দুঃসময়টা পার হয়ে যাক ...







তোমার চিন্তায় কয়েক লাইন

তোমার দরজা না খুললে আমার ভয় হয় না
আমি জানি এ যাবৎকাল তুমি পাখির মতো
বুক নিয়ে খাঁচা নির্মাণ করে চলেছ
অন্ধ বাসায় আলো ফোটানোর জন্য
বসিয়েছ হাজার ওয়াট লাইট
পর্দা টাঙিয়েছ বিলেতি কায়দায়
ইকেবানা সাজানোয় হাতও পাকাচ্ছো ইদানিং
তবু তোমার দরজা না খুললে আমার ভয় হয় না
কিন্তু খুব ভয় হয় যখন দেখি তোমার
একটাও জানলা খোলা হয়নি কয়েকদিন
ভয় হয় কেননা
রোদ আর বাতাস ছাড়া তুমি যে বাঁচতে শিখে গেছ
সেটা না জেনেই আমি দরজা বন্ধ করেছি
তোমার আগেই.....







নেমে এসো মেঘ

নেমে এসো মেঘ, যে ভাবে ধানের শিষের চোখে জমে ওঠে কুয়াশার জল, তুমিও নেমে এসো জলের ভারে। এত উন্মাদনা যে ভালো লাগে না আর। পালকের মতো হালকা শরীর নিয়ে উড়তে উড়তে কখন যে কোন খাদে গিয়ে পড়বে, কখন যে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে অস্তিত্ব, কখন যে ধরবে ফাটল, জানো না। কিছু কিছু সময় একটু  ভারিও হতে হয়। থিতু হয়ে বসা বাঁধানো উঠানে, কাঁঠাল গাছের ছায়ায়, মনে করিয়ে দেয় সম্পর্ক। পাথরের সঙ্গে পায়ের সম্পর্ক, সবুজের সঙ্গে প্রাণের, নির্জনতার সঙ্গে খাদের, স্মৃতির সঙ্গে আপনজনের।  কিছু সবুজ পাতা ঝরে পড়ুক, কিছু কথাও মনে পড়ুক। নেমে এসো মেঘ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দার বুকে নেমে এসো, সভ্যতার সবচেয়ে দুর্লভ প্রজাতির বুকে নেমে এসো।  কিছুটা ভারি হলে হয়তো গর্জে ওঠা অহংকার কমে আসবে। কিছুটা...কিছুটা।