শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

মৌসুমী রায়


মৌসুমী রায়

বন্ধ্যাযাপন

শালীধানে বেঁধে নাও সম্পর্কের আঁটি
উপচানো গোলা ভেসে যায়
নিড়বিড়ে পাগলীর অবরুদ্ধ কাম

এখন ফসলক্ষেত পুরুষের বাসি গাল
ব্যথা পেলে  আতাড়িপাতাড়ি ঠৌঁট
সেখানেই নীড় খুঁজে নেয় 

কেমন সহজে ভুলে যাও
মিথ্যার স্তোকে কত এমন বিবশ
শ্রাবণ বৃথা কেটে যায়
বীজ বোনা হয় না 








প্রেতপুরী

শহরের বুকে জ্বলছে না আর আলো,
এ শহর আজ মৃতের যক্ষপুরী
উৎসব বাতি এক ফুঁয়ে গেছে নিভে,
স্মৃতির সরণী হাতড়ে কেবল মরি

আমি তুমি সেই পথে হেঁটে গেছি কাল
হাতে হাত ছিলো মন ছিলো মন ঘেঁষে
এখন শুধুই একলা খোয়াবনামা,
ঘরের টানে ঘরে ফেরা দিন শেষে

উৎসব রাতে আলো জ্বলে ছিল পথে,
খুশীয়াল মনে জ্বলে ছিল রোশনাই
শূন্য বেদীতে প্রতিমা এখন খড়,
ধূপ ধুনো পুড়ে শুধু পোড়ো পোড়া ছাই

হোমের আগুণে  পুড়েছে  সে সময়,
ধিকিধিকি জ্বলে নিভে নিভে যাওয়া আশা,
আগামীর ভোরে আসবেই সুসময় 
পথহারা পাখি গৃহকোনে  পাবে বাসা

শূন্যমনেতে বিষাদের ঢেউ ভাঙে,
কাশ বন  দূরে একা একা রাত জাগে,
তবু জোছনায় আজো ওঠে সেই চাঁদ
তবু আনন্দ  তবু আনন্দ লাগে






হাওয়াবদল

তুমি কি এখনো মুঠোফোনে ঘন ঘন
বদলাও ডিপি!
এখনো  বৃষ্টিদিনে চিলেকোঠা ঘরে
বসন্তবাহার নামে শরীরে তোমার!

                  
কস্তুরী গন্ধ নাভিমূলে পথ হারায়,
কারো সময় কি এখনো?
হঠাৎ রেগে উঠে ভেঙে ফ্যালো, কৃষ্ণচূড়ার
গুচ্ছে ভরা ভাস?

এবার ও কি ঈশ্বরীপাটে
দোলের সংকীর্তন শেষে,ঘরে ফিরে
আবীর গুলালে রাঙা সিঁথি
চুপিসারে দেখেছো তুমি আয়নায়?

বসন্তবিকেলে তোমার ছাদ বাগানে
গুনগুনিয়ে  ভ্রমর শুনিয়ে যেত গান
শিমূলের এলোমেলো ফুলগুলো,
তোমার আনমন কোলে লুটোপুটি

সন্ধে হতে সেই ফুচকার গাড়ি,হা
সিমুখ ছেলেটির হাঁক, দিদি লেবে এসো!
ভীতু ভীতু নতমুখী ঘরবালি তাঁর
একমনে চাট মাখে
দু হাত ছড়িয়ে উছল হরিণীর মত
তোমার সে নেমে যাওয়া
টকাটক ঢেউ তুলে জিভে নেওয়া স্বাদ
এখনো আমার ঠোঁটে
আজো সেরকম, তুমি কি ভুলেছ সব?
সবটাই কি?

আমার ফাগুন আকাশ আজো তুমিময়
আমার বাদলদিন একলা বালিশ
আমার বিরহরাত  বাসরের ভোর
সিঁদূরের দাগ আর হালকা আদর

এতসব চিহ্ন তোমার পথরেখা জুড়ে
ভুলতে যে চাই তবু পথভোলা নাই
বলো তুমি বদলাবে কি
ঝোড়ো রাতে তারাদের বাড়ি
বেভুল বিভাবে বসন্ত বাহার
শাঁওণিয়া ঝুম ...