অক্ষয়
কুমার সামন্ত
একাকিত্ব
আমি একটু কাঁদতে চাই
না, গাছতলায় একা দাঁড়িয়ে
নয়
পাখির কাছে নয়
বাঁধভাঙা যে মিছিল
এগিয়ে আসছে
তার সামনে নয়
তোমার বুকের কাছেও
নয়;
ও মানুষ, তুমি কি আমাকে দিতে
পারো
দ্বন্দ্ববিহীন একটু
একাকিত্ব
যেখানে আমি একটু
আমার কাছে
আমার মতো কাঁদতে
পারি!
আমি একটু ভালোবাসতে
চাই
না, সমুদ্রকে নয়
পাহাড়কে নয়
ঝর্ণাকে নয়
তোমার নরম
অস্তিত্বকেও নয়;
ও মানুষ, তুমি কি আমাকে দিতে
পারো
দ্বন্দ্ববিহীন একটু
একাকিত্ব
যেখানে আমি একটু
আমাকে
আমার মতো ভালোবাসতে
পারি!
ও একাকিত্ব, তুমি কি আমাকে
খুঁজেছ কখনও?
ঘুমের ভেতর যখন আমি
বড্ড একা
কেউ আমাকে ছুঁয়ে
থাকে না
আমিও কাউকে ছুঁয়ে
থাকি না
তখন তুমি কাছে এসো, জড়িয়ে থাকো;
এমনভাবে জড়িয়ে থাকো
যেন আমি ভালোবাসতে
পারি
তোমাকে জড়িয়ে একটু
কাঁদতে পারি।
পরিযায়ী
এ চোখের জলের শেষ
নেই
এ চোখের জলের শেষও
হয় না
এ চোখের জলে শুধু
গাল ভেজে
শাসক কখনও ভেজে না!
মাথার ওপর এত্তো বড়ো
আকাশ
বড্ড বোঝায় ঢাকা
সূর্যও পায়নি কোন পথ
আলো ফেলবার
গরীবের ঈশ্বর কি
সবসময়েই বোবা?
কষ্টের ভেতর যে
বিদ্রোহ মেলছে ডানা
তার জন্যে আজ কে
দায়ী
আমিও তো ঘরেবসে
লিখছি এ কবিতা
কি আর পেরেছি, হয়তো আমিও আততায়ী।
জীবন ও মৃত্যু
রাস্তা সব শুনশান
কোন মানুষের চিহ্ন
নেই
শুধু মৃত্যু একা
হেঁটে চলছে।
তার কি কোন ভয় নেই?
কে তাকে এতো শক্তি
দিল?
পাশ থেকে মায়া বললোঃ
'আমি'।
জীবন বললো, তুমি তো মানুষকেও
দিয়েছ।
তবে আমার কেন এতো ভয়?
-- আসলে তুমি তো ভেবেছ
মৃত্যু মানে
অন্ধকার
বা অন্ধকার মানেই
মৃত্যু।
-- তাহলে হাঁটবার পথ
কিভাবে পাবো?
-- তোমার হৃদয়ের ভেতর
যে মোমবাতি জ্বলছে
কখনও একটু সময় করে
তার সামনে
তোমার অন্ধকারকে
বসিও।