সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

তাপসকিরণ রায়

 


তাপসকিরণ রায়


হোক পরকীয়া


হোক পরকীয়া--

আসলে নারী নেই, তা হলে ভালবাসা নেই।

মনের ভালবাসা যৌবনের একটা কাল--

সে সময়টা কি আমি পবিত্র ছিলাম !

তোমার ছাড়া না বাঁচার ভ্রম, কেটে গেছে,

তোমায় পেতে পেতে একই অভ্যন্তর,

একই মত যান্ত্রিক ঠোকাঠুকি।

মনের অন্য পিঠ বুনো হাঁস হয়ে উড়ে যায়।

সোঁদা ঘ্রাণ কিংবা অচিন পোশাক থেকে তুমি উঠে আসো--.

দেখি, অন্য কেউ ছুঁয়ে আছে মন।

তোমা থেকে অগণন নারী উঠে আসে--

অনাম সে তোমাকে রোজ রাতে আবার টেনে আনি। 

বাঁধা পড়ি, রূপান্তরিত শিলায় চকমকি জ্বালি--

আমি নেমে যাই, নাভি তলে উর্বরা ভূমির রেচনে, 

মন প্রবাহে জোয়ার ভাটা খেলে,

অন্য দেহ থেকে সংলগ্নআমি উঠে আসি।

 

 

ন্যুড স্ট্যাচু

 

কামনার মালা গাঁথি--প্রতিদিনের রঙ শাড়িতে

দিনে দিনে উবে যায় রোমন্থন।

কল্পনার পাশকাটা নারীর চোখে আমি অপার পসার দেখি।

পানেরাঙা লাল ঠোঁট, ছলকানো হাসির মাঝে আমি খান খান ভাঙি।

বস্তুত আমি ঘর, দেখি, আমি পর দেখি,

পরনারীর বিহ্বল শরীর কামনায়

আমার ঢলে পড়া উৎস কামনা,

কিছু গোপনতা ভালো লাগে--আমি যে বেঘর--

নিয়নের নিচে চোখ ধাঁধে, মনে হয় এক দিন না হয়

শিকল খুলে দিই মন--রাতের প্যাটারা খুলে চকমকি জ্বালি--

দেখি তোমার রূপফলক,.তোমার চলনে জলঢেউ,

তোমার বলনে নষ্ট নারীর প্রলাপ।

কামনা বাসনায় মিশে গেলে, শুধু শরীর উঠে আসে।

মন নেই, রঙ মদিরায় ভালবাসার জুলাপ, মুদ্রায় শুধু পরকীয়া মন।

মায়া ভরে নয়, নিষিদ্ধ আঙুরের বোঁটায় অবৈধ টোকা মারি,

তোমার প্রতীক চিহ্নে একটি স্ট্যাচু, ন্যুড স্ট্যাচু,

আমার সেন্টার টেবিলে রাখা থাকে।  

 


 

অনামিকা


কি নামে ডাকবো তোমায় ?

ফুলটুসি, নাকি অনামিকা ?

হাসে নারী, ডাগর চোখে সে আমায় দেখে।

ভাল লাগা আছে, আমার বুকে আর ভালবাসা নেই।

সে সব ক্ষণস্থায়ী উবে যাওয়া কর্পূর,

এখন ক্ষণে ক্ষণে ভাল্লাগে, চৈতন্যদ্বার বন্ধ রাখি

ঝাল মশলায় মেখে নিয়ে অনামিকাকে--

ওর ঠোঁট লেহনে উন্মাদনা আছে, মজ্জাগত স্বাদ আছে,

বাসি হবার আগের ঘ্রাণ ও উষ্মা মন মারে। 

তার ক্রমশ ঠোঁট বেয়ে বন্ধুর ভূমি ধরে অগোচর

নাভি ছিদ্রের উন্মাদনায় এ কি যন্ত্রণা সুখ-- 

যা কিনা পবিত্রতায় কিংবা ভালবাসায় নেই !

এই ঘরের সকাল বিকেল দুপুর সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত

ক্যালাস মার্কা একই হাসিমুদ্রণ !

একই ভাবে কাছে টেনে নেওয়া, নির্লিপ্ত একই মেশিনী ঘটঘটাং--

নাম দিয়ে কাজ নেই, অনাম থাকো তুমি, অনামিকা ! 

শুধু একটি নারীর শরীর রাখা থাক--

বৈচিত্র্য নোটন পায়রার ঝুঁটিতে তার মুচকি হাসি দেখি। 

আমায় পাগল পাড়া করেছে সে--এই পাশের কলঙ্কিনী সই,

আমি তো চাই সেই লণ্ডভণ্ড পোশাকের ভিতর ঘ্রাণ,

মজা কাঁথার গন্ধ, সাপের ফোঁস, তাকেই কবলে করতে

জালঝাঁপ দিই। যেটুকু উঠে আসুক খানাখন্দ, চিড়ফার--

সে টুকুই আমার কাছে চমক সুখ-- 

কি নাম তোমার ? আমি জানতে চাই না।