সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

পুষ্পিতা চট্টোপাধ্যায়

 


পুষ্পিতা চট্টোপাধ্যায়

 

প্রেমের পদাবলী

 

তোমার সাথে মিলন হবে বলে

দিগন্ত পথ ছুটছে অগোছালো

রাত্রি বাড়ে, ঋণের বোঝা নিয়ে

তোমার কাছে পৌঁছে যাওয়া ভালো।

 

অনেক কথা জমাট পাথর বুকে

আখর ঘেরা নিথর উঁচু টিলা

খোলা আকাশ রাত্রি জাগরণে

রূপকথাময় মাঠ পেরোল নীলা।

 

পেরিয়ে এল তেপান্তরের মাঠ

পেরিয়ে এল ঘুমের মরুভূমি

পেরিয়ে এল জীবন ভাঙা মেঘ

আর কত পথ, আর কতদূর তুমি।

 

অনেক কথা বলব বলব ভেবে

কেলাস, বরফ, খণ্ড খণ্ড শিলা

মশাল জ্বেলে, হৃদয় কর আলো

দ্বার খোলা থাক,আসছে প্রিয় নীলা।

 

আর কতরাত প্রেমিক পদাবলী

আর কতকাল অলীক মেঘে ডুব

এবার এসো যুগলবন্দী হই

ভালবাসতে ইচ্ছে করছে খুব ।।

 

 

 

খুব কাছের

 

যেমন করে সন্ধ্যা হয়

তারপর নামে রাত্রির অন্ধকার

ঠিক তেমন করেই তুমি চলে গেলে 

বুকের ভেতর গুড়গুড় করা ভালবাসা

হঠাৎই নিয়ে এল জগৎ জুড়ে

চিনচিনে অসহায় মনখারাপ!

ধীরে ধীরে মনে হল

তুমি আমার খুব কাছের ছিলে

খুব চেনা কেউ

ভাবতে থাকি••••

কোথায় আমাদের দেখা হয়েছিল ।

সত্যি কি আমাদের দেখা হয়েছিল?

সাহিত্যসভায় কিম্বা কোনো গোধূলি সন্ধ্যায়

বিয়ের আসরে ?

তোমার সেই মায়ার মতো মুখ আর

ঋজু শিরদাঁড়া যার প্রতিটি রোমকূপে ছিল

কিশলয়ের মত সবজে আতর ঘ্রাণ

তোমার মোহন ডাক যে আজো শুনি

আজও পাগল করে

এই শিরশিরে অন্ধকারে!

 

 

 

 

ভালবাসা ফুরোয় না আর

 

ভালবাসা ফুরোয় না আর

ঝুলতে থাকে গাছে পাতায়

আরো সব স্পর্শকাতর গলিতে••

 

কবেকার পাল্টে যাওয়া

বসন্তদিনের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়

একান্তে বিকেলের মাঠে

কিছুটা সময় নিজেদের মত মেপে

ঘাসের ডগা কামড়ে শুন্য দৃষ্টির কাগজে

চেয়ে রই নীরবে•••• পরস্পরের চোখে

সেখানেই যত জল গড়িয়েছে এ যাবৎ!

সংসারযাপন আর প্রেসক্রিপসনের আখরে

অবগত হই যাবতীয়

চাষবাস আর মৌমাছি ও

হুলকাহিনীর বহন বৃত্তান্ত!

 

তারপর গাছে পাতায় দুজনের হাত

ছুঁয়ে গেলে আশ্চর্য শিরশিরে হাওয়ার

ঢেউ ছুটে যায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে

চোখ বন্ধ করে টের পাই

ঘামে ভিজে যাচ্ছে জমি!

 

 

 

 

তুমি হাসলে

 

তুমি হাসলে হেসে ওঠে নীলার আকাশ

হাওয়ায়  লাগে দমকাবতী মাতন

উত্তরের সব বরফ গলে যায়

প্রবাহ গঙ্গার মতো

ঢেউ জাগে হৃদয় থেকে হৃদয়ের ঘ্রাণে

শব্দরা জেগে ওঠে নিষ্কলুষ

হাওয়ায় তোমার তর্জনী খেলিয়ে খেলিয়ে

তুমি মেপে চলো ভারতবর্ষের ম্যাপ

আরো কতদূর এগিয়ে গেলে

তুমি ছুঁয়ে যাবে নীলার আঁচল

যে আঁচলে লেখা আছে

নাতিশীতোষ্ণ নদীর গোপন গভীরতা

আদি ও অনন্ত কবিতার খুনসুটি

তুমি অবলীলায় স্বরবর্ণ বলে যাও

ব্যাঞ্জনবর্ণের কথা ভাবতেই

তুমি টের পাও তুমি প্রেমে পড়েছ !

 

দেশ নয় দেশের মত

 নারী নয় নদীর মত !