সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

বিকাশ ভট্টাচার্য

 


বিকাশ ভট্টাচার্য


যাপনচিত্র


সেইসব একান্ত নজর, জামা-জুতো, সুষম

আহার, এমনকি জলের বোতল

সেইসব পেছনডাকা মাঙ্গলিক উচ্চারণ

স্কুলবাস, বুকের দেয়াল জুড়ে অলিখিত

বয়ানের গুহাচিত্রগুলো,

সেইসব অলিন্দ উঠোন, ফ্ল্যাটবাড়ির

একচিলতে বারান্দার যাপনচিত্র

মেঘ আঁকেনা।

সারাদিন তুমি ফাঁকফোকর গ'লে আসা

রৌদ্রফুলগুলো

সযত্নে কুড়িয়ে রাখো

সুগন্ধে ভরে যায় ঘর কিন্তু গুনগুন করে কেউ

গেয়ে ওঠে না ।


অথচ অর্ধেক আকাশের পর যে অর্ধেক

আকাশটা থাকে সেখানে

নক্তদীপ জ্বেলে রাত্রি নেমে আসে

চন্দন জ্যোৎস্না পড়ে বুকের চাতালে

নিশিগন্ধা বন থেকে উড়ে আসে উচাটন

হাওয়া । অকস্মাৎ গায়ে বেঁধে

পাশের টেবিল থেকে সুনয়না কলিগের

আড়চোখে চাওয়া।


সেই থেকে রাত্রিও প্রথমার্ধ-অপরার্ধে

ভাগ হয়ে গেছে।

 

 

রঙিন মাছ


চোখ টেনে নিয়েছিল মেঘনয়না

ঘরে সারস্বত আলো,

রঙিন মাছের মতো খেলছিল

টানবে না কেন?

যদিও সহগামিনী অন্য কারো। তবু

কত পা একসঙ্গে হেঁটেছে দুজন

কতটা হৃদয় মচকানো


কেন যে মেঘ করে বুকের ভেতরে

সব মেঘে বৃষ্টি ঝরে না, শুধু বিদ্যুচ্চমক

তবু কতটা মোহান্ধ হলে আলেয়ার টানে

মাইল মাইল রাত্রিও পার হওয়া যায় 


অঙ্গ জুড়ে পঞ্চপ্রদীপ, অসতর্ক শাড়ির

নিচে এক ঝলমলে জ্যোৎস্নামহল

চোখ চলে যায় অজান্তে কখন

এভাবে টেনো না তুমি মেঘনয়না

 

 

রাত্রি প্রেমিক


কী দ্যাখো সারারাত জেগে রাত্রিপ্রেমিক

কী দ্যাখো সহস্রাক্ষে সারারাত ধরে

রাত্রিমুখ? অনাবৃত রাত্রিশরীর?

 

একপাশে অর্ধেক আকাশ জ্যোৎস্নামদির

আর একপাশে অর্ধেক বিছানা জুড়ে

তদিদং হৃদয়কুসুম

 

বুকের গভীরে তবু অনির্বাণ সূর্যকেশরের

পোড়া ছাই ভেসে যাচ্ছে শূন্য চরাচরে