সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

 


সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়


বালিতে জ্বল জ্বল করে


কি এক আশ্চর্য ভ্রম

ভ্রমরের মতো দিনরাত গুনগুন করে

ঠারেঠোরে চোখ দেখে কোটিদেশে জ্বলছে আগুন।

লোকলজ্জা যেন ফণীমনসার ঝোপে তুলেছে আড়াল,

আড়ালে মনোময় উদ্দণ্ড চাড়াল

চুপি চুপি পেরিয়ে যায় লক্ষণ রেখা।


হৃদয় তো হৃদয় চায়,

আর চায় গোপন চাহুনি থেকে চুঁইয়ে পড়া

আদুরে ইশারা ও পালকের গায়ে লেখা পলকের ছোঁয়া,

ভালোবেসে ভালোবাসি বলা তো যায় না কিছুতে

ভ্রমের ভ্রমণ শেষে বিপ্ বিপ্ জ্বলে ওঠে বাতি।


বিপদ সীমা লঙ্ঘনের জাগলারি জানে পরকীয়া

জানে মধু আর মধুপের সুনিবিড় মায়া,

জানে গোপন মেসেজে কিভাবে উজাড় করা যায়।

ভয়কে জয়ের নেশা দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোল তুলে

শরীরে জাগিয়ে তোলে নম্র আদিমতা।


কি এক আশ্চর্য ভ্রমে দিনমান খেলাচ্ছলে

রক্ত প্রবাহে যেন বাঁশি বেজে ওঠে,

চারচোখে জেগে থাকে মোহনার অপূর্ব ভাঙন,

বালিতে জ্বল জ্বল করে গোপনে লুকিয়ে লেখা

প্লাস চিহ্ণ দিয়ে দুইখানি নাম।।

 

 

 

টিউলিপ


পাঁজরের দরজা খুলে

একটা গোপন ইচ্ছে,আর একটা ইচ্ছেকে

ছুঁতে বোহেমিয়ান হয়ে যায়!


অন্য ইচ্ছেটি তখন আয়নায় সেরে নিচ্ছে

আকর্ষনীয়া হবার নিখুঁত প্রসাধন,

মনোহরণী শাড়ির আঁচলে উড়ছে পাখি!


রেস্তোরাঁর নিভৃত কেবিনে

দু'টি ইচ্ছে মুখোমুখি বসে থাকে কথাহীন,

অভ্র কুচির মতো ছড়িয়ে পড়ে হিম পরকীয়া!


চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে লুটিয়ে পড়ে থাকে

বিষণ্ণ টিউলিপ, দুটি ইচ্ছে জানলই না ---

টিউলিপটি, কে কাকে দিতে চেয়েছিল!

 

            

 

পটে লিখা


সেটাই ছিল তোমার প্রথম ডাক

আমার ছিল সাড়া দেবার তাড়া

গোধুলি তার রঙ দিয়েছে ঢেলে

তোমায় নিয়ে আমি পাগলপারা

 

চোখে তোমার প্রেম-মদিরার ঢল

বুক ফাটে তো মুখ ফাটেনা জানি

দুধের মতোই উথলে ওঠা ঢেউয়ে

অলীক স্বপ্নে  নিপুণ রাহাজানি!

 

আমিও তো ডেকেছিলাম তোমায়

মন্দ্র বাতাস ভাসিয়েছে সে দাগ,

ভাবতে থাকি কোন সে অভিমানে

তোমার এমন আমার উপর রাগ!

 

পাখি ফেরা আকাশতলীর মাঠে

দুটি ছায়া নিবিড় হয়েই আছে,

হিংস্র চাঁদ মেঘের আড়াল থেকে

টর্চ জ্বেলে দেয়, বিপদ ঘটে পাছে!

 

মাল্যবান ঝোপের কোনায় কোনায়

জোনাকীরাই সন্ধ্যাদীপের শিখা,

তোমার আমার এই যে পরকীয়া

এটাও তো প্রেম সত্যি পটেলিখা।।