পৃথা রায় চৌধুরী
একটি পরকীয়া সিরিজাংশ (আকাশ)
ঘুম চোখ খুলে রাখি অপলক
তোমার মেঘাচ্ছন্ন নিঃসীমে;
সাঙ্কেতিক গাম্ভীর্য্য নিশান
ওড়ায়
ধুধু মরুপ্রান্তরে
সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ফসফরাস
নিমেষে মিশেছে বীজবপণের কালে
অনুযোগকারী ভ্রুসন্ধিতে, অতলান্ত।
তোমার জন্যই জরিপাড়ের সংস্কার
অন্যদের পাতে গুছিয়ে ভাগ করে
দিই, আকাশ;
তখন বলো, “তুই তো বেশ ভালবাসতে
পারিস!”
আমার গ্রহণবেলার নাড়ীর টান
কালো গোলাপে মাখিয়ে রাখি
অরক্ষণীয় শেকলবন্দী আতর,
ম্লেচ্ছ করো আমায়।
ব্যালকনির মনখারাপ গ্রিলে
দাঁড়িয়েছি কতবার
একদিন-দু’দিন-তিনদিন, তোমার দেখা নেই আকাশ
পিঁপড়েসারি রবিবার পেরিয়ে যায়
চাঁপাতলায়
হঠাৎ ঝুলন পূর্ণিমার জ্যোৎস্না
চাইলে আবার
ভাবলেশহীন খুশি ছোটে সবার
অলক্ষ্যে কোণাকুণি
আনন্দেও থম মেরে রক্তকরবী ফোটে
রোজ রাতে।
সানগ্লাস খুলে এখন সোজাসুজি
তাকাও
ঠোঁট চেপে হাসো,
একরোখা আঙ্গুল নেড়ে জানাও,
কোনও ওজর আপত্তি চলবে না;
সাবধানে ‘না’ বলেই দেখি মেঘছায়া
পর্দার আড়াল থেকে তোমাকে
সযত্নে সন্তর্পণে চোখে হারাই, আকাশ;
হঠাৎ খেয়াল করি
আমার আধখাওয়া কফির কাপ
কি আদুরে তোমার হাতে।
তুমি আকাশ, শুধু তুমি
প্রথম আঘাত করেছিলে
ওড়না চাপা রীতি সুড়ঙ্গে
সেফটিপিন খোলা মজ্জাগত দ্বিধা
ধুয়ে যায় ফাঁকা গঙ্গাপাড়ের
ঘেমো লজ্জাবৃষ্টিতে
তুমুল এলোমেলো হাওয়ায়
মিশে যাক যুগল ডলফিনের
ভেজা হৃৎপিণ্ডের ঘোড়দৌড়।
উগ্র আধুনিক অতীতপ্রেমিক
যুগান্তরের আকাশ তুমি,
অভ্রকুচি ছড়িয়ে পড়ে
দীর্ঘদেহী কোমল গড়িমসির
ছোঁয়ায়
বেতালা ছন্দে দোলাও
নিস্তরঙ্গ আদিম ঝিল;
দোনামোনার মোমশিখা
বাড়বানল সোহাগী হলে
চাঁদ ভাসানো নিষিদ্ধ চর্চাহীন
খাদে
নেমে যাব তোমার এক কথায়।
ঝিরঝিরে ইলশেগুঁড়িতে উঁচুনিচু
হেঁটে যাব
তোমার পাশে পাশে একটা বিকেল
একটা সন্ধ্যে, চাইব নায়াগ্রা আড়াল
তোমার সাথে আকাশ,
এক পশমিনা রাত;
ময়ূর পেখম মুহূর্তে তুমি হয়ে
যাও
আমার অন্য দিন।