কাকলি ঘোষ
পথের ধারে ফেলে এলাম পথের মাপ
যেমন বৃষ্টি রেখে যায় অবুজ
সবুজের ছাপ;
ভবঘুরে বাউল যেমন একতারায়
বাঁধে স্বপন।
সাজানো ফুলের বাগান আমার নয়
জানি
কুয়াশায় ভাসিয়ে রাখি জঙ্গলের
কানাকানি,
নদীর স্রোত ভরিনি ঘড়ায় আমার
জলের ফোঁটারা নিস্তব্ধ বানে
তোলপাড়।
বেহিসাবি মাতোয়ারা প্রেম ঝরনা
যখন,
বন্যায় কি মানে বাঁধের শাসন?
পর আর রইল আকাশ কই,
মেঘেরা তো ছুঁয়েছে নীল
ধোঁয়াশা ওই -
পাহাড় চূড়ায় ভাসে বেনামী
বন্ধন।
দে দোল দোল
ঘরের দরজায় খিল দিয়েছি,
মনের দোর যে হাট করে খোলা, - এ কি!
আমার বুকের খরস্রোতার প্লাবন
তুমিও কি শোনো নাকি?
বুকের তিল গোপন সুরে
রেখেছিলাম আড়াল করে,
তোমার ছোঁয়ায় আদিম নেশা
ঢেউ বোনে সে সর্বনাশা।
ভাঙতে চায় নিষেধ আগল,
বলিরেখায় সাগর পাগল।
ভালোবাসার সংজ্ঞা খোঁজে
তোমার আঙ্গুল কাশফুল সাজে।
অসহায় হয় দরজার খিল,
ছায়া ঠোঁট ছুঁতে চায় বুকের
ঝিল।
অনেক নিষেধ, অনেক মানা -
দুঃসাহসের নেই সীমানা;
ভালোবাসা তবু হাসনুহানা,
সুবাস পেরোয় ত্রিসীমানা।
টবের ফুলে নীল প্রজাপতি,
বারান্দার অবকাশে চাঁদ ইতিউতি -
জোনাকি রাতে নিষিদ্ধ আঁকিবুকি
শরীর জুড়ে মনের অনন্ত ফাঁকি।
ওই বাঁশি যে বাজে দূরে
বলো না কানে কানে আরো একবার
ওই ভিজে কথা শুনতে মন করে
তোলপাড়,
ফাগুন হয়ে ফিরে ফিরে আসে
বারবার।
যেমন জলপ্রপাত ঝাপসা কথা বলে,
বলবে তুমি ভিজে রোদের সোনালী
মৌনকথা।
আমি থাকবো ঝুঁকে আলসে মেঘ হয়ে
পাহাড়ের ঢাল বেয়ে এলোমেলো করবো
তোমার বুকের জঙ্গল
হঠাৎ বৃষ্টি হই যদি না বলে,
ভবঘুরে কুয়াশায় সবুজ ডুবে
গেলে যাক না,
নদী ঠিক বলে যায়, না বলা কথা
বৃষ্টি না হয় দিলো একটু ফাঁকি।