কাকলী মুখার্জী
ফিরবে তো
এলোমেলো আঁচলে দুটো শুকনো পাতা
লেগে আছে এখনও!
নদীর ধারে বুড়ো বটগাছতলাটা
এই ভর সন্ধ্যেবেলাতেও
বড়ো বেশি অন্ধকার, বড্ডো নিশ্চুপ!
একদম রাতের মতো!!
শুকনো ঠোঁটে লেগে আছে
চলে যাওয়া 'প্রেমিকের' ভেজা চুম্বন,
সারা শরীরে দখলদারি হাতের উষ্ণ স্পর্শ,
ভরে আছে চোখ তার
অস্পৃশ্যমান ছায়ায়!
মনে আশঙ্কা কাল আবার সে ফিরবে তো!!
যমুনা তীরে
গভীর গোপনে শ্যামের স্বপনে,
আঁধার ঘনায় বরষা গগনে,
শ্যামের খেলায় ভুবন আলো,
ও শ্যাম বিহনে জগৎ কালো!
রাধার চোখে বিষাদ ঝরে,
শ্যাম যে আছে হৃদ মাঝারে!
তবুও আকুল চাহনী পাগলপারা,
রাধের দুনয়নে বহে অশ্রুধারা!
ওদিকে গোপিনী সাথে মত্ত কানাই
নিঠুর কানুর নাই দেখা নাই,
অভিমানে রাধা মুখ ফিরায়ে,
কানু সাড়া দেয় বেণু বাজায়ে,
রাই ছুটে যায় আগল খুলে,
ঘর ছেড়ে আজ যমুনা কূলে!
বাঁশির ও সুর অমোঘ টানে,
রাই ভেসে যায় অশ্রু বানে!
নীল যমুনায় উথাল পাথাল
আকাশ তখন জ্যোৎস্না মাতাল,
নিশীথ রাতের ঘনায় ছায়া!
রাধারাণী ভাবে সে কোন মায়া!
বেণুবনে ঘটে দোঁহের মিলন,
অতল এ প্রেম হোক চিরন্তন....
পরকীয়া
আমি মিশিয়ে নিয়েছিলাম তোমায়,
কখনও, আমার ঘর গেরস্থালীর
সংসার গোছানো গন্ধে
মিলিয়ে দিয়েছিলাম তোমার শরীরের গন্ধ।
নির্জন দুপুরে কিংবা নিশুত রাতে,
ফাঁকা ফাঁকা একাকীত্বের মাঝে,
ভরে নিয়েছিলাম তোমার কথা,
কবিতা আর টুকরো 'ভালোবাসাগুলো'!
তোমার দেওয়া আবীরের রঙ,
মিশে গিয়েছিল আমার সিঁদুরের রঙে।
তখন তোমার অভিধানে ছিল না
'পরস্ত্রী' 'পরনারী' শব্দগুলো?
তোমার কাছে সেই সম্পর্কটা 'অবৈধ' আজ!!
ওহে 'তথাকথিত প্রেমিক',
পর তুমি করে রেখেছিলে,
আমি যে আপনের চেয়েও আপন ভেবে...
তোমার কাছে তাই এ 'পরকীয়া'!
আমার কাছে এমন 'নিজকীয়া' আর বুঝি নেই।