হামিদুল ইসলাম
বংশীলোচন
সাত সকালে দরজা খুলে
মারছে উঁকি কে ?
বংশীলোচন ঘুমিয়ে আছেন
দরজা এঁটে দে
।।
বাড়ি তো নয় স্বপ্নপুরি
স্বপ্নরাজের আসর
ঘুমিয়ে আছেন বংশীলোচন
সাজিয়ে ফুলের বাসর ।।
নাক ডাকছে গাঁ গাঁ করে
মুখটা বেজায় খোলা
হাসছে যেনো বংশীলোচন
ঘুম পাগলা ভোলা
।।
ঘামে ভেজা সারা শরীর
হাতের পাখা অচল
বুকটি নাচে তড়তড়িয়ে
ঘুমের রাজ্য দখল ।।
কড়মড়িয়ে খাচ্ছে কিছু
শক্ত চোয়াল খানা
ঘুমিয়ে আছেন বংশীলোচন
জাগর হতে মানা
।।
গিন্নি তবু ভয়ে ডাকেন
অনেক হলো বেলা
বংশীলোচন স্বপ্ন দেখেন
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ।।
হাজার ডাকে ভাঙলো ঘুম
দুপুর যখন বটে
বংশীলোচন রেগে বলেন
ঘুম হলো না মোটে
।।
লাশ
ওরা লোকগুলোকে ইট ছুড়লো
কাঁচ ছুড়লো
চলন্ত মিছিল
তখন দুপুর
ঠা ঠা রোদ।।
রক্ত -------------
রক্তে ভিজে উঠলো
রাজপথ
জনপথ
সবুজ মাঠ
ক্ষেত খামার।।
ওরা পালালো খুব তাড়াতাড়ি
চিৎকার
প্রতিবাদ
প্রতিরোধ
রাস্তায় রাস্তায়।।
পুলিশ আসলো শেষ বেলায়
নির্বাক দৃষ্টি
রিপোর্ট লিখলো
অদৃশ্য হলো
পর মুহূর্তেই।।
ফাঁকা রাজপথ
লাশ তখনো সেখানে
নিথর দেহ
নিথর মন
নিস্তব্ধ অরণ্য ।।
ওরা সর্বহারা
ওদের মিছিল দেখলে
ভয় হয় হায়নাদের
ওরা একসাথে দাঁড়ালে হায়নারা পালায়
আসুন হায়নাদের তাড়াই ।।
জল
জলকে দেখে পালাচ্ছে ওরা
জলে জল ছয়লাপ পৃথিবী
এখন পায়ের তলায় জল
হাতের চেটোয় জল
জলে ভাসছে অরণ্য ।।
এখন বাগদি পাড়ায় জল
জল ছলছল
জলে ভেসে আসছে বাঘ সিংহ হায়না
ভয়ে কাঁপছে আজমিরা বাসন্তিরা
ডাগর ডাগর বয়েস
।।
আক্কেল চাচার হাঁটুতে জল
তবু পায়ে পায়ে হাটেন মিছিলে
স্লোগান দেন, জিনিসপত্রের দাম কমাও
অর্জিত অধিকার ফেরাও
জলে পড়ে কাতরাচ্ছে মানুষগুলো ।।
জল হজম হয়ে যায় খুব সহজেই
আক্কেল চাচাদের হজম করা যায় সহজেই জলের মতো
কিন্তু আক্কেল চাচারা এক মিছিলে দাঁড়ালে
জলের চাপ বাড়ে
জল আটকে যায়
।।