হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
ভুলে যেতে শেখো
ভুলে যাও, ভুলে
যেতে শেখো
ভুলে যাও, ভুলে
যেতে শেখো
মনে রাখলেই মনে মনে
ছড়িয়ে পড়বে হাজার
ডালপালা
শিকড় যাবে গভীর থেকে
আরও গভীরে
লক্ষ লক্ষ খণ্ড হয়ে
ভেঙে পড়বে
এখন তো গুটিয়ে নেবার
পালা
চারপাশ আজ বড় ছোটো
হয়ে আসছে
এক উঠোন ভেঙে বার ঘরে
ভাগ হয়ে যায়
কোথায় তুমি আর
কোথায় তোমার
ফেলে আসা শৈশবের
মার্বেল,
বেনেপুকুরের পারে
সারি সারি আমগাছ,
গামছায় ধরা বেলেমাছ
আর
হাঁটুকাদা কৈশোরের
উঠোন ?
এসব আজ আর কেউ মনে
রাখে না
মনে রাখলেই ছড়িয়ে
ছড়িয়ে যাবে
ছড়িয়ে গেলেই বেড়ে
যাবে মায়া
ভুলে যাও, ভুলে
যেতে শেখো
ভুলে যাও, ভুলে
যেতে শেখো ।
মায়ের ভাতের হাঁড়ি
হাঁড়ি খুলে পাঁচটা
ভাত
যে ভাতটা সবচেয়ে
ওপরে সেটা আমার পাতে
ঠিক তার নিচেরটাই
বাবা পেল
ফ্যান শুষে যে ভাতটা
একটু মোটা হয়েছে
সেটা বড়দার পাতে
গেলো
হাতার ঘায়ে যে ভাতটার
কোণটা একটু ভেঙে গেছে
সেটা দিদির পাতে ভেসে
এলো
হাঁড়ির কানায়
শুকিয়ে যাওয়া ভাতটা কাজের মাসির
মায়ের ভাতের হাঁড়িতে
তখন এক আকাশ নীল
সাদা মেঘের টুকরোগুলো
আমাদের হাসি
মেঘ দেখতে দেখতে মা
দুপুর বিকেল পেরিয়ে যাচ্ছে।
অন্য মানুষ
যখন চলে যেতে বলেছো
চলেই যাচ্ছি
কিন্তু কেউ একজন
তোমার সঙ্গে থাকবেই
হয় সশরীরে আর না হয়
তোমার ভাবনায়
আমার যাবতীয় ভুল
সরিয়ে দিয়ে জন্ম হবে তার
সময় তো লাগবেই ------
একটু একটু করে চেনার জানার
তার চেয়ে এই ভালো নয়
কি কোনো জনবহুল
রেলস্টেশনে
আমরা আবার মুখোমুখি
একদিন বসি
আমাদের ভুলগুলো দূরে
সরিয়ে একটু অন্যরকম হই
এতে শুধু আমাদের লাভ
নয়
আমাদের চারপাশের
মানুষগুলোও দুটো অন্যরকম
মানুষ পাবে ।