শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

 


অনন্যা চট্টোপাধ্যায়


অভিশাপ


কোমল গান্ধার এর বিষাদকে

তুমি বদলে দিয়েছ আনন্দময় নিষাদে।

সুপ্রাচীন জীবাশ্মের অন্দরে পেয়েছো প্রাণের আশ্বাস।

তোমার শরীরে ব‌ইছে

হোমোসেপিয়েন্সের গরম রক্তস্রোত—

উলঙ্গ আদিমস্রোতকে তুমিই

সামাজিক জনস্রোতে  দিয়েছ বদলে।

তবুও —

তোমার আদিমসত্ত্বা থেকে তুমি বিচ্যুত হ‌ওনিএকচুল।

জঙ্গলের হিংস্র জানোয়ার পরাজিত

 আজ তোমার হিংস্র নখরের ঘায়ে।

কখনো অরণ্যের ক্রন্দনে,

কখনো বাতাসের বিষবাস্পে,

আবার কখনো পশুপাখির আর্তনাদে ,

তোমার ওপর‌ই অভিশাপ বর্ষিত হয়।

তবে কি তুমি  অভিশপ্ত?

নাকি সভ্যতার অভিশাপ তুমি নিজেই?

 

 

পার্থক্য


আমার বারান্দায় ভিজে-কাপড় শুকায়,

তোমার বারান্দায় ক্যাকটাস শোভা পায়।

আমার বিছানার তলা পুরোনো প্যাকেটে ঠাসা,

তোমার বিছানার তলা  ভালবাসা আর ভালবাসা।

আমার কললিস্টে  সব্জিওয়ালা থেকে দুধ‌ওয়ালা,

তোমার কললিস্টে উপচে পড়ে ননীবালা

আমার গৃহকোনে ধুলোজমা বুড়ো রেডিও;

তোমার গ্রামোফোনে বাজে বিঠোভেন আর জো।

আমার  ডায়েরী শেষ হয়ে যায় কথা ফুরোয় না,

তোমার ডায়েরী কবিতা আর গল্পে ফলায় সোনা।

আমার দিন শেষ হয়ে হায় রাত্রি উঁকি মারে,

তোমার দিনের হিসেব চাইলে রাত্রি এসে পরে।

 

 

 

 

ভিক্ষা


কাঠফাটা দুপুরের তপ্ততা

বা‌‌‌ঙময় হয়ে বেঁচে থাকে নোনাঘামে,

ভিক্ষার হরিবোল দ্বার থেকে দ্বারে ঘোরে,

সুর থাকে সপ্তমে।

নোংরা ঝুলির ব্যর্থ গল্প

খঞ্জনী কেঁদে বলে;

তোমার ভাগ্যে আমি খাবো হায়

এসেছি যে কোন্ ছলে!

শুধবে কে ঋণ,করবে কে দান

কেই বা কার যে খায়,

শতজন্মের ঋণ শোধ করে

লাঘব করো সে দায়।