শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

বিপ্লব চক্রবর্তী

 


বিপ্লব  চক্রবর্তী


অরূপে-কথনে


জলা জংলায় মাটি ও পাথরে তোমাকে দেখালে

পথে ও বিপথে গাছে গাছে পাখিও সেকথা বলে

করজোড় প্রণামেতে তোমাকে সামনে শুধু দেখি

অরূপেতে থাক তুমি মূলাধার ও ব্রহ্মকমলে


নদীর গোপন স্রোতে নীহারিকা অভিসার সেরে

জল প্রপাতের দেখেছি পতন অনন্ত  ব্যথায়

ধ্বনিময়তার সমস্ত বেগ কম্পনে তুলে এনে

প্রেমে মজি সুষুম্না আর ইড়া পিঙ্গলার  কথায়


যে প্রথম  শূন্য  এঁকে রেখেছিল পাথরে মাটিতে

মায়াবী পৃথিবী  থেকে শুনেছিল সূক্ষ্ম মহানাম

পাখি ও গাছেরা  পশুকুল থেকে অতি ক্ষুদ্র  কীট

ঋষিপদ ধরে পুষ্পিত শাখায় গেঁথেছে  প্রণাম


লুকিয়ে সে আছে আজো বুঝিনাতো অনন্তের বাণী

অক্ষরের মোহজাল ভেদে নাও অক্ষম পারানি।

 

 

 

প্রাক যুদ্ধশিবির থেকে


সমর্পণ  করলাম আমার যাবতীয় আয়ুধ

অপরিচিত শব্দের সঙ্গে কথা বলবো না আর

কৃতকর্ম থেকে এক একটি সকাল ফেলে দিয়ে

ছেড়ে যাব আমার শৌখিন পোশাকের ভাঁড়ার


 মাঠ জুড়ে তাঁবুর পর তাঁবু সেনা প্রধানদের

গ্রাম গঞ্জ থেকে শ্রমজীবী সৃজনের আগমন

নগর নাগরের হাতে হাতে বেলফুলের মালা

কবজিভাঙা সেনাপতিরা ছড়াচ্ছে ঈশ্বর বমন


বলিরেখা সমৃদ্ধ উজিরেরা মৌনব্রত পালনে

তাঁদের অভিজ্ঞতা গোপনে প্রেমিকাদের বলছে

শুধু নজরানা পৌঁছে দিচ্ছে গোপন নৈশপ্রমোদে

শিবিরগুলো ভেতরে ভেতরে দুর্নিবার  জ্বলছে


রাজার একটা লেফাফার জন্য শিবির বানানো

বেছে নিতেই  হবে আত্মরক্ষার  ছাউনি  যে কোন

 

 

 

পুকুর-প্রেয়সী


জলের গভীরে  চলে যেতে চাই কোনোদিন

পুকুরের ভাষা চোখজল কানে কানে ডাকে

দু 'কুল ছাপানো টলটলে প্রেম উঠে আসে

আমার শরীর থেকেই  অন্য এক স্বর

শুধু গভীরতা খুঁজে নেমে যায় আরো নীচে

সাঁতারের কত সব ভাব কখনো উপুড়

অবসাদে  চিৎ হয়ে ভেসে ভেসে জল কাটা

জলের উপরে  জমে ওঠে সাঁতারের খেলা

ডুব দিয়ে নেমে যাই নীচে পাঁকের পরষে

ঠেলা মেরে তুলে দেয় দম জলের ওপরে

শরীরের অবসাদে  শুধু সাঁতার জমাই

ঘাট থেকে দূরে মধ্যপুকুরে জলকেলি

বাংলার ডোবা খালে আষাঢ়ের অভিসার

যুবতীপুকুর এভাবে  ডেকো না তুমি আর।।