শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

গৌতম কুমার গুপ্ত

 


গৌতম কুমার গুপ্ত


আ মা ন ত


তোমার সমস্ত ভালো লাগা মুহূর্তগুলি

সিন্দুকে ভরে রেখেছি আমানত জাবেদায়

বরাদ্দ ভাঙিয়ে খাবো একে একে


একটা সৌখিন কাগজে লিখে রেখেছি

অঙ্কশাস্ত্রের নির্বাচিত সংখ্যাবিশেষ

যার অর্থমূল্যে আমি আরো কিছুকাল

বেশী জীবিত হবো সময়ের বাহুল্যে


দ্যাখো স্মরণযোগ্য হয়ে উঠছে

আমার গগনচুম্বী নীল

ভরে নিচ্ছে অফুরন্ত উড়ান ডানায় ডানায়

চঞ্চুতে রাখে নি বিষাদ

কোন এক হেমন্তের বিকেলে

ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাতাসের ধ্রুপদী লঘুসঙ্গীত

আমি যার মর্ম বুঝেছি রূপোলী বসন্তের বিরহে


নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখি এককে

তুমি কখন করতালি হয়ে রয়ে গেছো

আমারই দু'হাতে

নিজেকে বাজাতে পারি না আর কেবলই বেতাল

জমে না হৃদয়ের ধ্রুব বাঁশিটির ফুঁ

ফাঁকা হয়ে গলে যায় ব্যাথিত ফুসফুসের নিঃশ্বাস


হাঁটু মুড়ে প্রসারিত দুই হাতের বেষ্টনী বেয়ে

তুমি উঠে আসো অনর্গল এক বিশুদ্ধ অবকাশে

 

 

 

মুর্চ্ছনা


মুর্চ্ছনা দেখার আশায় বসে আছি

কিছুটা মোহ কিছুটা পলকের

বিদ্যুৎ মুহূূর্তে ঝিলিক দেয় জানি

একটা ভয়ের জন্ম হয়

পোড়ায় যেটুকু প্রাপ্তি


মুর্চ্ছনা এলে হৃদয়ে তার রেশ চিরায়ত

সচকিত আনন্দের অভিসার

আরো কিছুকাল উপভোগ জীবনের মানে

শোকার্ত করে না দ্বন্দ্বও নেই

শুধুই প্রাণিত শ্বাসের অববাহিকা


তুলে রাখি ছলছল নিবিড় আকুতি

বারবার আসুক মুর্চ্ছনাটুকু

একটি রূপোলী রেখায় একটি হলুদ স্বর্ণাভ ছায়ায়


তবু বলো হে ঈশ্বর

জন্মগত এ শোকের পাথর

            কোথায় রেখে আসি?

 

 

 

ব্যক্তিগত অসুখ


অজস্র চীৎকার থেমে আছে

কোটি কোটি প্রাণে গাছ ও পতঙ্গে

ঘুমচেনা বাকরুদ্ধ অভ্যাস করেছি বিরুদ্ধতায়

থামাতে পারি নি সশব্দ আলজিভের মহড়া


কে কবে চিৎকার করে বলেছিল

আমি ভালো নেই

এ আমার ব্যক্তিগত অসুখ

শোনে নি নিষেধ তবু সুখ ভেঙেছিল বায়ু


ইথারে খবর য়ায় গুঞ্জন ও চিৎকার-কথা

নির্বাকে বেতার সংবাদ

ছল লিখে চুরমার করে পাতার হিসেব

আওয়াজের কানাগলি পেরিয়ে


জমে আছে গুমরানো কান্নার চিৎকার

একদিন ঠিক ছক্কা হবে প্রাণিত বলয়

আমাদের  সরব খাঁচায়