বিকাশ চন্দ
সজল চোখে একই ধ্রুবতারা
আলোর ভেতরে ও কি সত্যি মিথ্যে লুকোয়
অন্ধকারে অনিশ্চিত অদেখা যাদু জাল,
পাড়াময় মুক্তিহীন চুক্তির অনুগ্রহ ঘুমের ভেতর---
আর একটা নিশীথের চিৎকার যেন মর্মঘাতী,
স্মৃতিময় সুখের আস্তরণ ঝরে পড়ে মাটির পলেস্তারা।
প্রতিদিনই অপ্রতিহত জীবন যাত্রা থমকে দাঁড়ায়----
নিষাদ কালের প্রহরীদের গলায় ঝোলে মৃত্যুর ঠিকানা,
প্রবল আত্ম বিশ্বাসে জেগেছে হৃদয় আনন্দ হাওয়ায়---
কে কাকে ভয় করে মৃত্যু পরবে জীবন আছে আনন্দ
চুম্বনে,
নরম সবুজ শরৎ পরব পেরিয়েছি এখন নবান্ন আসর।
কোজাগরী চাঁদ ছুঁয়েছে সদ্য সোনা ঝরা ধান শীষে---
কত নীল শোভন আকাশে ওড়াউড়ি মেঘ পাখি বিনোদন,
কলাবতী চাঁদের বর্ণ কুশলতা মেতেছে বন্যতায়----
নিপুণ ফুলে পদ্মে কী শোভন মধুময় মৌমাছি গান,
তবুও জীবন চলে যেতে পারে স্বেচ্ছাচারী সময়
গহ্বরে।
কত রাত স্বপ্নে জাগে ঘুমের ভেতরে অসহনীয় ক্রোধ---
ঘরে বাইরে অন্তর্গত মোহন করুণা ধারায় ভিজে গেছে
প্রাণ,
অনাহূত কোমল উষ্ণতা বেঁধেছে কালের কোমল কথা,
আমার চেনা প্রতিমার চোখ টলটলে গভীর
নীলকমল---
পরস্পর অনাহূত ডাকে সজল চোখে একই ধ্রুবতারা।
থমকে গোপন বন্ধনে
এইতো সময় পৃথিবীর সকল উঠোনে সূর্যের রোদ,
বিষাদের রাত পেরোলে দিনের ঘরে যন্ত্রনা ঢোকে---
অদ্ভুত শুনশান গ্রহ নক্ষত্র আকাশ জুড়ে রাত রতি
ফুল,
বাঁয়ে ডাঁয়ে কেউ কেউ বেঁচে নেই আবারও কি প্রাচীন
সভ্যতা !
সভ্যতা কতটা এগোলে পারস্পরিক সম্পর্কে দাঁড়ায়
বাধকতা
চেনা পরিসর সরে সরে যায় কোথায় সে জাগরণ ঘর,
কোথাও কোনো মন্দাকিনী অপেক্ষায় কোনো মান্দার
বনে--
জল জানে রানীদিঘির কলসিতে জল ধবল বুকের তৃষ্ণা,
ছোট বেলা পুতুল খেলা জানিয়ে ছিল কখন জগন্মাতা।
জয়শঙ্খ বাজবে কবে থেমে নেই বিপদে শ্বাপদের থাবা
কোন অন্তরালে নেই গোপন তর্জনী ডেকেছে বিপত্তি,
বুকের বাসনায় হিংসা জমে মহাকাল দাঁড়িয়ে দুয়ারে
তবু
স্বঘোষিত রাজা রানী ঘরে তোলে নীতি বিরুদ্ধ ফসল।
গোপন তালাশের নির্দেশ কুঁড়িতেই কেটে ফেলো নাভি
মূল---
ফুল না হলেই ফলবে না শস্য সকল বন্ধ্যা বিষোদগার,
উন্মিলিত চক্ষে তখন মায়া হীন মুখোশ ঢাকা সর্বনাশী
কথা
সকল হৃদয় জানে বৈদ্যুতিন তুমুল লড়াই থমকে গোপন
বন্ধনে !
মানুষ গাছেদের হিসেব
দিনগুলো সব যেতেই থাকে যেতেই থাকে----
কোথায় যায় শোকের ঘরে না সুখের ঘরে,
পাখিগুলো চতুর জানে কোথায় দানা পানি
দায় কারুর নেই নিরুদ্দিষ্ট দলে আমি থমকে,
চতুর্দিকের ভারী বাতাস উতল হাওয়া মর্ম বেদন---
বন বাতাসে উড়ে যায় মানুষ নাকি গাছের অরণ্য রোদন।
বোধন কালের বিলাপ মিষ্টি কথার সৃজন মোহন---
যে যেপথে গেছে ফেরে না সে পথে পিচ্ছিল বড়,
সমান্তরাল বাসনা লোভ যদি মেলে ঈশ্বর কণা---
লাল সুরকির রাস্তার দু'দিকে এখন সব্জী
আবাহন,
ওলট পালট মেঘের রোষে আকাশে বিদ্যুৎ বালা,
চাঁদের বাড়ির বোন ভাই পো পদ্মের বনে মজে---
ঘাসের উপর আবছা ঘুমে তখন মাতন চন্দ্র কলার।
মানুষ গাছের ছেলেরা সব বন থেকে যায় বনান্তরে---
হঠাৎ ক্ষেপা হরিণ হরিনী জটলা এখন বন পুকুরে,
বনভূমি তো উথাল পাথাল গাছেরা দিব্যি ছত্র
ছায়ায়---
লালন পাগল ধামসা মাদল মহুল রক্ত গন্ধে মেলে,
কে হারালো কাদের ঘরে হিসেব মেলেনি হাড়িয়া গিলে---
চিরটা কাল একই থাকো কি কাজে বাঁচো জীবনে।
হা হুতাশে হেমন্ত রোদ নিভেছে মণি পূজোর উঠোনে---
চেনা ফুল পাখি গাছ আর মানুষ গাছেদের হিসেব
মেলেনা।