শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

আবদুস সালাম

 


আবদুস সালাম


হা হা কার নিয়ে দিব‍্যি বেঁচে আছি

 

কষ্টের দাঁড় বেয়ে পাঁজরের ব‍্যথা দিন দিন বাড়ছে

শ্বাস প্রশ্বাসে বাড়ছে  ভাইরাসের হৃদ‍্যতা

বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে সম্মিলিত অবক্ষয়

পিপাসায় ফাটছে গলা

উল্লাসে মাতে শূন্য গেলাস

 

পাথুরে রাস্তা____

সুকতলা ছিঁড়ে যায়

জলের সন্ধানে আমরণ হেঁটে চলা

বিবেকের দহনে  জর্জরিত অন্ধকার

মৎসকন্যারা  নীল সমুদ্রে বিনিদ্র চিৎকারে মগ্ন

কে কার কথা শোনে

 

মনখারাপ ডানা মেলে উড়ছে

দাঁড় বেয়ে বেয়ে  কষ্টেরা গাইছে  ভাটিয়ালি

ভাঙা নদীতে জোয়ার নেই

শ্মশানে ডেকে চলেছে পৃথিবীর শিয়াল

 

বিষ্ময় সূচক সর্বনাম লিখে দেয় বিশ্বাসের সংজ্ঞা

মনুষ‍্য মাঠে মুহুর্মুহু হয় বজ্রপাত

কেঁপে ওঠে বিশ্বাসের ভিত্

পাঁজরের ব‍্যাথায়   রক্তাক্ত হয়  হাসির ফোয়ারা

চোখের জল ভাঙা নদীতে  আনে জোয়ার

 

হাহাকার নিয়ে দিব‍্যি বেঁচে আছি

কষ্টের নদীতে মৌলবাদ  ফাটায় গলা

ইহকাল পরকাল হাবুডুবু খায় অন্ধ বিশ্বাসের চোরাবালিতে

 

 

 

 

ফরমান

 

শকুনের ডানায় ভর করে আসে নগরীর অন্ধকার

বাইবেলের পাতা থেকে ঝরে যায় দুর্বিষহ নিঃস্ব দিন

 

ওরা মারিয়াম কে ও ছাড়েনি অপবাদের কালি মাখাতে

 সেদিন সূচিতার আর্তনাদে কেঁপে উঠেছিল নগরীর ভিত্

কৌমার্য হারানোর মিথ্যে অপবাদে পৃথিবীর পৃষ্ঠায় নেমেছিল অন্ধকার

 

কুয়াশার জঙ্গলে জটলা বেঁধেছিল সন্ন‍্যাস রঙের রাস্তা

শকুনের বলিষ্ঠ চিৎকারে বাইবেলের পাতায় নেমেছিল অন্ধকার

বলিষ্ঠ ফরমান জারি হয়েছিল নগরীর পাড়ায়

 

 

 

 

সভ‍্যতা ও মৃত্যুর পাগলামী

 

অনুভূতির দরজায় মৃত্যু এসে দাঁড়ায়

অসহ‍্য বিশ্বাসে পাড়া হুলুস্থুল

ভ্রান্ত আসকারায মেতে ওঠে মনিষীদের ছদ্মনাম

 

সারা দিন যুদ্ধ যুদ্ধ মহড়া

যন্ত্রণার স‍্যুপ খেয়ে বেঁচে আছি

অন্ধকারের বাজনা বাজছে তারস্বরে

পৃথিবীর লজ্জা ঢেকে দিচ্ছে বেনামী মৃত্যু

দিনের আলোয় লিখে রাখছি হাহাকার

 

প্রাচীন সাম্রাজ্য ঘিরে মৃত্যুরা  মিছিলে মত্ত

ফাঁকা ঘরে বাজে শূন্যের স্বর

বিকেলের ধান ক্ষেতে পড়ে আছে পরাজয়

মৃত্যুর পাগলামীতে পুষ্ট হয় সংখ্যা গরিষ্ঠ সভ‍্যতা

 

 

 

পরকীয়া নৌকা


রান্নার বালতিতে গড়াগড়ি খায় সভ‍্যতার চাঁদ

তৃষ্ণার গান গাইছে নিষিদ্ধ দুপুর

 

পিতৃপরিচয়হীন  প্রজন্ম বাজায় শাঁখ

নদী ধারে আলেয়ারা  দেখায় আলো

ভ্রান্তির পেয়ালা নিয়ে বসে আছি শুধু

 

নষ্ট পরাজয় হাততালি দেয় মানবতার দুয়ারে

পরকীয়া নৌকা  পাল তোলে অনন্তকালের পথে

 

 

 

 

পরাজয় কথা


মৃত্যুর সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে

বাতাসে ভাসছে প্রতিকূলতার কলোরোল

অভিভাবকহীন বিষন্ন তীর ছুটে আসছে

নিঃসঙ্গ চেতনার বাদামী ঘোড়ায় চেপে


বর্ধিষ্ণু বিলাসিতায় হারাতে বসেছে মূল‍্যবোধ

আত্মদৈন‍্যের অন্ধকারে ডুবে যায় আবেগ

আমাদের ক্রন্দন ধ্বনি ছুটে চলেছে বিধ্বস্ত পাড়ায়

প্রতিদিন এভাবেই লেখা হচ্ছে পরাজয় কথা

পৃথিবীর পরতে পরতে বাসা বেঁধেছে মরণ

 

 

 

কলহ বর্ণের পাখি


সংসারের গোপন লকারে বজ্রগর্ভ মেঘ হুঁংকার ছাড়ে

মধ‍্যবিত্ত ঢোল বাজে নগরীর গলিতে

হুঁংকার ছাড়ে তেলহীন প্রদীপ

ভালোবাসার ঠিকানায়  মাথা তুলেছে জলবিছুতির চারা


কলহ বর্ণের পাখিরা সঙ্গম দেখে উদ্ভিদের

বিচিত্র উৎসবে হিংসুটে পাখিরা নীরব হয়

আত্মসমীক্ষার  আয়নায় ঝুলিয়ে রাখি সঙ্গমের শংসাপত্র

প্রেমিক জন্ম সার্থক হলে আত্মসমর্থন ডানা মেলে


হিংসুটে প্রতিবেশীর দেওয়ালে আঁকা কলহের বিজ্ঞাপন

অভিসন্ধি মূলক বুদ্ধিজীবী বিন্দুহীন শূন্যতায় গর্ভবতী হয়

বিশ্বাস ধর্ষণের দায়ে গ্রেপ্তার হয় কলহ বর্ণের পাখি


প্রকাশ‍্য রাস্তা দিয়ে পার হয় মধ‍্যবিত্ত ধর্মাবতার

 

 

 

 

শূন্য সময়


সংসার থেকে নেমে যাচ্ছে আঁশটে  জল

শূন্য সময় হেঁটে চলেছে রাতের লাইব্রেরীতে

আত্মসমীক্ষায়  আক্রান্ত গ্রন্থগুলো উইএর খাদ্য হয়েছে অনেক দিন

গৃহপালিত সংসার মাঝে মাঝে বন‍্য হয়ে যায়

 

উদাসীন ঝড়ে উড়ে যায় মৌনতা

সময়ের ফসিলে শনাক্ত হয় বিভাজিত আত্মার ক্ষরণ

শূন্য চিহ্নগুলো মহাকালের দূরত্ব মাপে

 

রান্নার বালতিতে ঘুরপাক খায় আঁশটে গন্ধ

সম্পর্কের সূতোয় ঝুলে আছে অলীক প্রেম

নরকের দরজা দিয়ে আসে পুঁজরক্তের বমি করা টক টক গন্ধ

ঘুণ খাওয়া রাতে ঝগড়ায় মাতে দ্বিধাগ্রস্ত কবন্ধের দল

শকুনেরা পাহারা দেয়  সংসার সাজানোর উৎসভূমি

 

রক্তপাতহীন  কেটে যাওয়া সময় বাঁশবনের রাজত্ব ফিরে পায়

 

উপন্যাসের  পাতা থেকে নেমে আসে বজ্রগর্ভ মেঘ

রাতের লাইব্রেরীতে সংরক্ষণ যোগ‍্য ছায়ারা মদের পেয়ালায় চুমুক দেয়

ভুল জীবনের মিথ্যা কুয়াশায় ঝাপসা হয়  মৃত্যুর বর্ণনা

 

সংরক্ষণ যোগ‍্য  আস্থা ভিজে যায়

শূন্য সময়ের  দ্বিধাগ্রস্ত ডোবায়

সম্ভাব্য রাতেরা সেরে নেয় অলীক স্নান

নিয়ামক সময়  কপালের তিলকে এঁকে দিচ্ছে শূন্য রঙের বিকেল