জারা সোমা
আজান
সায় দিতেই কাঁটাতারের বেড়া টপকে
এপারে নেমে আসে প্রেমিক
অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তায় জমে ওঠে আসর
চোরা চোখ মেপে নেয় দূরত্ব
আরেকটু সময় পেরোতেই আড় ভাঙে গোধূলি
আড়তদারের সঙ্গে আড়াইপ্যাঁচ দিতেই কিস্তিমাত
তারপর ধিরে সুস্থে ঘুরতে থাকে চাবি
তুলাযন্ত্রে শুরু হয় ভার বোঝাবুঝি
নরম গদিতে বসে মেলেনা হিসেবের খাতা
বরং মান্থলি স্কিমে জমা রাখতে হয় ঋণ
ঋণাত্বক শব্দেরা জমায় আয়েশি পল
পাশে পড়ে থাকে আশার ভাত
তারপর স্নান সেরে গণ্ডূষ ভরে ফিরতে হয়
আপন ঠিকানায়, সন্ধ্যায় কেবল সাক্ষী থাকে
ক্লান্তির আজান।।।
প্রেমিক
আকাশের যে কালো মেঘটাকে দেখে
তোমরা মেঘদূত আওড়াও
আমি তাকে মৃত্যু বলি
মেঘভাঙা বৃষ্টির তান্ডবে
ভেসে যায় বাড়িঘর
আলোর নাচনে জ্বলে স্ফুলিঙ্গ
নেড়েচেড়ে দেখি গিরিখাত
উত্তেজনার কুরুক্ষেত্রের চরম সীমায়
ছুঁয়ে দিই চাঁদের বুক
তোমরা যাকে জোছনা বলো
আমি তাকে বলি মরণ
আকাশ হতে চাই বলেই
হয়ে উঠতে পারিনা হঠকারী প্রেমিক।।।
মরশুম
অচেনা পথে নিজের ডাকনাম শুনে বিস্ময়ে দেখি
মেঝেয় গড়াগড়ি দিচ্ছে পরজন্ম
কেমন আছি জানতে চাইলেই সংকুচিত হয় ইহকাল
ঠিকানার ঠিকাদারিটুকুই যাপন
সেকথা আর কীভাবে বলা যায়
তাই এড়িয়ে যাবার ঢঙে বলি আজ থাক
তবুও ফ্ল্যাশব্যাকে ভেসে ওঠে স্মৃতি
আমি ঠোঁট রাখি প্রিয় ঠোঁটে
দুটো মৌমাছি হুল ফুটিয়ে মেপে নেয় জমিজমা
আমরা ঝালিয়ে নিই আর্টস-কমার্স মেলবন্ধন
অপরাধী চিলেকোঠা সাক্ষ্য দেয় অভিসারের
সব কথা ঠিকঠাক মনে না থাকলেও
রেজাল্টে ডাহা ফেল করেছি সেটা
আজও মনে করতে পারি মাশুল গুনতে গুনতে
রিক্ত জীর্ণ হৃদয়পুরে চিরকাল পাতা ঝরার মরশুম
সেখানে বর্ষা ও বসন্তের প্রবেশ নিষিদ্ধ।।।