শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

জবা ভট্টাচার্য

 


জবা ভট্টাচার্য


জীবন  যেমন


এক


      শুরু থেকেই জীবন ঠিকঠাক শিখিনি

      আজকাল অনেক কথাই ফিরিয়ে নিতে হয়

      বদলাতে হয় মত

      আজ পৌঁছলাম যেখানে

      হয়তো পৌঁছানোর কথা ছিলো গতকাল।


দুই


      স্বপ্নের নথিপত্র ছিঁড়ে বুকের জমি পুড়িয়েছি বলে

      প্রেম ভালোবাসা দুঃখ সুখ আজ জীবাশ্ম  হয়ে

      বুকেই গুমরে  মরে অবিরাম।


তিন


       যে রাত্রির  ভেতর আমার  বাস

       তার উপকূলে ছুঁড়ে ফেলা লোকের বসত

       এখানে  চিরকালীন রাত

       ভেজা মাটি খামচে শুনি দুঃখের ধারাপাত।


চার


        ওয়েস্ট পেপার বাস্কেটে জমে ওঠা

        স্তুপাকার  কথার খোসা গল্প  কবিতা

        অদ্ভুত শব্দহীনভাবে  হাসে

        ওদের নিয়ে আজ আর মগ্নতা আসে না।

 

 

যদি জানতেম


জানা নেই

প্রিয়তমা হতে গেলে, নখ,দাঁত, চুল, চোখ,মুখ

ঠিক কতোটা সুন্দর  হতে লাগে---


জানা নেই

মনের মধ্যে আকুলতার পারদ কতোটা চড়লে

বসন্ত বাতাসে অভিসারিনী হওয়া  যায়---


জানা নেই

কতোটা বৃষ্টি ঝরলে- ব্যথার রাংতামোড়ক খুলে

ছেঁড়াখোঁড়া  মন নিয়েও ভালোবাসা যায়।


জানতে পারলে হয়তো শ্রাবণী মেঘের চোরাস্রোতে

হারাতো না অনঙ্গ জীবন।

 

 

 

ভুলে  যেতে হয়


কতোদিন  পর

আজও  কেন কষ্টের ফেনা বেহুদা

বুক থেকে উঠে চোখ ফেটে বেড়োতে চায়?

অলৌকিক মায়ার অক্টোপাস জাপটে ধরে আমায়?


কতোদিন  হলো? বলো-- কতোদিন?

আজ আর সেদিনের মাঝে-- কোটি কোটি

অনুপলে গড়া নিখাদ পাঁচিল।

যক্ষকীট কুড়ে খায় কুয়াশার  ধোঁয়া

কোনযুগে ছিঁড়েছে অভিধান, ঘুন পোকা কেটেছে

বর্ণপরিচয়---- মিছিমিছি অপেক্ষার কাল।


জানি কৃষ্ণ মেঘজাত বিমূর্ত অন্ধকার

এ জীবনে তবু বারবার

ভুলে যেতে হয়।