শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

তৈমুর খান

 


তৈমুর খান


পুরুষতান্ত্রিক


💚


এক একটি দুপুর ক্লান্ত করে দেয়


কোদালের ধার দেখি


                      জলের পিপাসা পেলে


                        উড়ন্ত বাজের ছবি দেখি


                                            ভেসে যায়


                                      আকাশের সীমানায়


কয়েকটি তালগাছ সংকেত পাঠায়


তাদের পাতায় পাতায় চৈতন্যের বাতাস ওড়ে


                       বাতাসে কেঁপে ওঠে নীল ঈশ্বর

 


 

মাটির ভেতর চলে গেছে আমাদের সীতা

 

মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে


আমাদের পুরুষতান্ত্রিক যুগ যায়


                 আমরা বিমর্ষ দিশেহারা


                   পৌরুষের ঘামে ডুবে যাই

 

 

 

মহাকাল পেরোতে থাকে


💚


জল খেতে আসে অবেলার হ্রদে

আমাদের ক্ষয়িষ্ণু বংশধরেরা  


দূর থেকে দেখি তাদের ঘিরে থাকে

ইতিহাসের প্রাচীন আত্মারা  


ছায়ারা হামাগুড়ি দিয়ে নামে

তাদের হাত পা মাথা কিছু নেই

জলীয় বলের মতো ঘোরে ...

অসংকোচে ঝরে পড়ে দৈবের গান

পাখিদের ভিড় কমে গেলে

একটি নষ্ট সভ্যতা চুপচাপ জেগে থাকে

মনুষ্যত্বহীন গন্তব্য তখন রাষ্ট্র নির্মাণ করে চলে


 

সেই ভয়ংকর রাষ্ট্র কোনো ঘুমের ব্যবস্থাও করে না

অবেলায় আঁচল পেতে দেয় শীতের সূর্য

মেঘের মহিমায় আটকে থাকে চাঁদের কলা

ইচ্ছারা ভাসমান নৌকা হয়ে চলে যায়

মহাকাল পেরোতে থাকে কাঙাল আয়ুরেখা 

 

 

 

পরানহীন


💚


দুপুরবেলা পরান কোথায় গেল?

নিপীড়িত রোদ্দুরে ধরণী ফেটে যাচ্ছে

অশোকবনেও কাঁপছে নিরালোক রাধা

এত জ্বর কারা মেপে দেখবে আর?

পরান গহন ভেদ করে চলে গেছে

নিবিড় বিস্ময় কিছু ছড়ানো মধুপুরে

হাওয়া নেই বিনিদ্র দুপুরে

কার থুথু ভ্রুভঙ্গি পড়ে আছে?

 


দুর্ভাগ্যের তীব্র ঘরে আমরা উদ্বেগ পেয়ে পেয়ে

সতত বিমর্ষ আর নির্বাক জলে ছায়া দেখি

ছায়ায় অসুন্দর দিন  , মৃত বাক্যধ্বনি

শুয়ে আছে , শয়ন ভঙ্গিমায় অদ্ভুত কাতর

আমরা অযোগ্য প্রজন্ম  , চেয়ে থাকি দূরে....

 

 

 

সভ্যতার কাছে


💚


সভ্যতার উজ্জ্বল আলোর কাছে

নিজেকে পতঙ্গ ছাড়া আর কী ভাবার আছে?

ডানা পোড়াতে থাকি আলোয়

নিজের অজান্তেই পুড়ে যায় ডানা

ক্ষত ও জ্বালায় হাহাকার ঢাকি

হাহাকার বেরিয়ে আসে তবু

হাহাকার শিউলি ফুল হয়ে যায়

নিজেকে সাজিয়ে রাখি গার্হস্থ্য টবে

সূর্যের করুণায় আর বৃষ্টির জলে

সভ্যতা আলো ও আক্রোশ বানায়

সভ্যতার কাছে আত্মবিশ্বাসের জ্বর

 

 

কতটা একা হলে


💚


কতটা একা হওয়া দরকার


এই ভেবে মাটির কাছে আসি


গাছের সাথে কথা কই


পাখিদের গান শুনি

 


এইখানে নদীর বিহ্বল ঢেউ


দেখতে দেখতে উদাসী মায়ায় ডুবে যাই


পাতাগুলি নৌকা হয়ে ভাসে


আকাশে অলীক পাখি ডেকে যায়

 


কতটা একা হলে


আমি নিজেকেও ভুলে যেতে পারি!

 

 

 

হয়তো


💚


অনেক মৃত্যু নিয়ে সংসার


শূন্যস্থানগুলি কিছুতেই ভরাট হয় না


বর্ষার জল জমে  , আগাছা জন্মায়


বুনোলতার ফুল ফোটে

 

দেখতে দেখতে বৃদ্ধ হই

 

হয়তো হাওয়া উঠবে


হয়তো ভেসে যাবে দক্ষিণের মেঘ


হয়তো চড়ুই পাখি উড়ে যাবে


                                 অনন্তের দিকে....