শনিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২০

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

 


দেবাশিস মুখোপাধ্যায়


বৃষ্টিদিনের কবিতা


বৃষ্টিকে নিয়ে জানালা লিখি

ঝড়কে নিয়ে রাত

তোমার বাড়ি হারিয়ে গেলে

হামলে পড়ে খাদ ।


আজকে কিছু লেখা নেই

সুলেখা কালি শেষ

গাছকে নিয়ে পাতার কাছে

বলেছি, আছি বেশ ।


শহর নিয়ে কাটছে প্রহর

নরমে গরমে দিন,

পাখিরা যেই ফুরিয়ে এলো

হারালো আলাদিন ।


ভাবছি না তবু হঠাৎ  এসে

হেসে ফেলো এক মুখ ,

ভেজা রাস্তা সেলফি তুলে

মেটালো ভুল চুক।

 

 

বরষা মেয়ে


বর্ষার কাছে একটি মেয়ে

ভিজছে খুব , যাচ্ছে নেয়ে

দু চোখ দেখে

অবাক পারা একটি গাছ

ডাঙায় ওঠা একটি মাছ

কবিতা লেখে

কলমে জল ভাষায় জাদু

মল্লার মেঘ বড়ই স্বাদু

কান ভরে যায়

সুর লেগেছে পাতার পাড়ায়

বাতাস গায়ে কাদা মাড়ায়

আনন্দ পায়

 

 

বর্ষা-ছন্দ


বর্ষা এসেছে পাড়ায় পাড়ায়

মেয়েরা হেসে আয়না মাড়ায়

হেসে ওঠে মেঘ কিছু

থই থই জলে কারা নাচ করে

কাদা মাখা দেহ চোখে রাখি ধরে

আমি নেমে পড়ি পিছু

বর্ষা এসেছে আকাশে আকাশে

পুকুর হেসেছে কই কই ভাসে

ডাঙা বলে আয় আয়

ছাতার বাহার রাস্তায় নামে

জল্পনা চলে ডাইনে ও বামে

উঠোনেরা ভেসে যায়

 

 

একটি কবিতা


ঝড় ভাবছিল না

রাত্রির শরীরে মাংসের কথা

বিছানার গান

ক্রমশ শীৎকার

বৃষ্টি ভেজাবার পর

জানালা বন্ধ করে দেয়


মেয়েটির নাম রাত্রি হলো না

সে বস্তিতে থাকে

তার কপাটে ছিটকিনি নেই


মেয়েটি কবিতা হতে চাইল

একটা সুস্থ ভোরের অপেক্ষায়


কারফিউ কবে তুলে দেওয়া হবে !

 

 

মৌতাত মৌসম


১.


বিকেল কেনার পর

বসে  আছি

একার সাথে


কথা হচ্ছে বৃষ্টির

একটা সুর

ভিজিয়ে দিচ্ছে ক্রমশ


আমাদের জনপদ

অপেক্ষা করছে

চাঁদ জয়ের

 

২.


খুনসুটির রাত্রি

বিছানা পেয়েছে

দীর্ঘ বর্ষার পর


সঙ্গমের প্রস্তুতি

পর্দা সরিয়ে

আলো আনে আকাশের


দেহের স্পর্শে দেহ

আমাদের ক্ষ্যাপামি

অন্ধকারে শব্দের জন্ম দিয়ে যায়

 

৩.

কীর্তন বাজে হাওয়ায়

রাত্রি রাধিকা হয়

তালপাতায় অক্ষর বাজে

 

চুলগুলি উড়ে যায়

তারায় তারায় তারানা

যমুনা উদ্বেল পুকুরের জলে


টুনি বাল্বের ছায়া

নিভে গেলে

কৃষ্ণ হেসে ওঠে