হরিৎ
বন্দ্যোপাধ্যায়
মধ্যরাতের সংলাপ
(একত্রিশ)
সীমান্ত
নিয়ে বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করলে একটা বদগন্ধ বের হয়, যতদূর চোখ যায় সবটাই আলো, আবার কখনও অন্ধকার, এই যে বিদ্যুৎ গতিতে
দৌড়ে যাওয়া ---- এটা তো কেউ থামাতে পারে না, যখনই এর সামনে গায়ের জোর
দেখিয়ে দাঁড়াবে তখনই সবকিছু ফেটে চৌচির হয়ে যাবে, সকলের ভেতরেই তো কিছু না কিছু
আছে, তাই ফেটে যাওয়া
মানেই ভেতরের জিনিস বাইরে এসে যাওয়া, এতক্ষণ যা ছিল সংকীর্ণ একটা জায়গায় এখন তা
উঠোনে,
ভেতরের
গন্ধে বাইরে কেন সায় দেবে, তাই একটা হাতাহাতি ব্যাপার, আর রক্ত ছাড়া তো কোনো কিছু ঠিক
জমে না,
একটু
আগে যা ছিল দিগন্ত বিস্তৃত আলো অন্ধকারের আল্পনা এখন তা ব্যক্তি রাজত্বের চিরকালীন
একচেটিয়া মেঘলা হাওয়ার করাল গ্রাসে, সীমান্ত শব্দটা ঠিক ছোঁয়াচে নয় তবে দূরে থাকাই
ভালো
(বত্রিশ)
বৃত্তের
বাধ্যতা অতিক্রম করলেই ওপারের হাওয়া এসে জামা কাপড় উড়িয়ে নিয়ে যাবে, সেও আর এক বৃত্ত
অতিক্রমের ডাক,
বৃত্ত
ভাঙলেই আর এক বৃত্ত দুয়ার খুলে বসে পড়ে, পুরাতন বৃত্তের অপূর্ণ ইচ্ছা নতুন বৃত্তে হাতের
নাগালে,
রাত
দিন একটার পর একটা ফলে ভরে ওঠে হাত, তারপর ফলের একঘেয়ে রঙের ক্লান্তিতে পরিধিতে আবার ফাটল, বৃত্তের সংখ্যা
গণনার বিষয় নয়,
বৃত্তের
বাইরের হাওয়া যতদিন গায়ে এসে লাগবে ততদিনই জামা পড়ার সার্থকতা, জামা নয়, বোতামেই চোখ, বোতামের বৃত্তই
আমৃত্যু তোমাকে ছুটিয়ে নিয়ে একের পর এক বৃত্ত অতিক্রম করাবে
চারদেয়ালের
স্বরবৃত্তে
চারদেওয়ালের
স্বরবৃত্তে দোল খেতে খেতে
জীবনের সবকিছু
আবিষ্কার করে ফেলার মত্ততায়
জানলা খুলে বাকি
পৃথিবীর শরীর দ্যাখে
দেওয়ালের বর্গাকার
ছিদ্রের গভীর নিদাঘ
কল্পনারও বাইরে
গ্রাম্য ঝোঁপের মধ্যে আটকে ছিল
ধুলোপথের দিকে
তাকিয়ে কে আর সারাদিন
সব কাজ ফেলে রেখে
চোখ রগড়ায়
যুক্তি বুদ্ধি
উড়িয়ে দিয়ে শুধু ক্ষমতার রেখায়
আবছা করে দিয়েছিল
বর্গাকার অন্য পৃথিবী
ধুলোর মানচিত্রেই তো
কথা বলে
পৃথিবীর যাবতীয়
পরিশ্রমী মুখ
আবছা পৃথিবীই
প্রগাঢ় হয় চারদেওয়াল জুড়ে
কথা বলে আন্দোলিত দু'বাহুর ঝড়