মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

সুস্মিতা মালাকার ঘোষ


সুস্মিতা মালাকার ঘোষ


খামখেয়ালী-গল্প

আজ কী জানি, ডাকছে কেনো একলা দুপুর
 মন কেমনের শব্দমালায় বাজছে নূপুর, 
 কাঠবিড়ালী গাছ-কোটরে একলা বসে
 খোপ-খাতাতে ক্লান্ত বুবাই অঙ্ক কষে।

আজ কী জানি,শান্ত কেন ব্যস্ত শহর
 জানলায় চুপ,কাজলা দু'চোখ, গুনছে প্রহর, 
 আলগা হাওয়ায় ভাসছে বোধহয় বেহালারই সুর
 মন-পাখিটা চাইছে যেতে আজ বহু দূর।

আজ কী জানি,ডাকছে কেনো নীলচে খাতা
 খুব গোপনে রেখেছিলাম  গোলাপ পাতা,
 ঐ পাতাটার সঙ্গে ছিলো একটা ফুল-ও
 সেই ফুলটাই ভুল ঠিকানায় মাখছে ধুলো।

আজ কী জানি, চলছে ঘড়ি স্মৃতির তালে
 টোল পড়েছে মিষ্টি মেয়ের লালচে গালে,
 পেছন দিকে আপনা থেকেই হাঁটছে সময় 
 দুঃখরা কী মন-পাখিটার আত্মীয় হয়?

আজ কী জানি,আসমানী রঙ খামখেয়ালী 
 তানপুরাটায় সাধছে দোয়েল,রাগ-ভূপালী, 
 সবকিছু আজ বৃষ্টি ছোঁয়ায় শান্ত হলো
 ঠান্ডা হাওয়ায় বৈরাগী-মন পথ হারালো।







ফোঁটার মাঝে ছন্দ বাজে

বৃষ্টির টুপটাপ রাস্তার গর্তে,
 জীবন চলছে ঠিক জীবনের শর্তে।

কাহিনী থমকে আছে শহরের গলিতে,
 জমে আছে ফসিলরা সময়ের পলিতে।

অগোছালো জীবনটা গোছানোর অছিলায়,
 কিছু কাজ পড়ে থাকে আজও এই অবেলায়।

ঘূর্ণির আবহেতে চাপা পড়ে কোলাহল,  
আজকের দুনিয়ায় আবেগটা যে অচল।

তবুও তো কেউ কেউ আবেগটা সাথে নিয়ে, 
 দৈনন্দিনতায় চলছে ঠিক এগিয়ে।

মুখ আর মুখোশের গরমিলে বন্দী,
 পরিস্থিতিটা আঁকে কোনো এক ফন্দি।

তবুও তো পথে হাঁটা, তবুও তো গুটি গুটি,
 তবুও তো জীবনেতে ঘটনার লুটোপুটি।

আমি-তুমি অসহায় জীবনের বৃত্তে,
 চলছি, চলতে হবে যেকোনো নিমিত্তে।

টুপটাপ বৃষ্টিরা লিখে চলে ইতিহাস,
 প্রতিটি ফোঁটার সাথে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস।

জীবনের বারান্দা কিছু কথা ধরে রাখে
 রঙ-তুলি নিজে নিজে সঠিক ছবিটা আঁকে।







ফুল ও কাঁটায়..
     জোয়ার-ভাঁটায়..

জীবনের এই ফুলদানিটাতে
       বৃথাই সাজাই ফুল,
 মাঝে মাঝেই মনে হয় বুঝি
       স্বপ্ন দেখাই ভুল।

সকাল-সন্ধ্যে দায়িত্ব আর
      কর্তব্যের মাঝে,
 কল্পনারই পিয়ানোটা যে
     ইমন রাগেই বাজে।

তবুও কিন্তু দুই পা ফেলে
     রোজই পথে হাঁটা,
 ফুল কুড়োতে গিয়ে দেখি
     ফুটছে হাতে কাঁটা।

চলার পথে জড়িয়ে ধরছে
      সমস্যা দুই পা,
 বলছে যেন পথের মাঝে
     এবার থেমে যা।

'থামবো', 'থামবো' - সময় হলেই
      বন্ধ হবে চলা,
 ভাবতে গিয়ে সেই কথাটা
     বুজেই আসে গলা।

কতো মানুষ পথ চলে রোজ
      আশার 'নাও'-এ চেপে,
 ভাবনা-চিন্তা সঙ্গী করে
      পা ফেলে মেপে মেপে।

অঙ্ক কী আর সবই মেলে?
      হিসাব করাই সার,
 সালতামামিতে ধরা পড়ে যায়
       গরমিল বারবার।

দৈনন্দিন ফুল কুড়োনোটা
       তবুও তো অভ্যেস,
 কাঁটা থাক,তাও ফুল তো ফুলই
       দেখতে যে লাগে বেশ।

জীবনের সেই ফুলদানি তবু
       অপেক্ষাতেই থাকে,
 কাঁটার মাঝেই যত্ন করে
       বাঁচার স্বপ্ন আঁকে।