মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

টিপলু বসু


টিপলু বসু

কোথাও যাবো না

আঁচড়ে দিচ্ছে কামড়ে ধরছে পা
আমি এদেশ ছেড়ে কোথাও যাবো না
বুকের মাটি ধসে পড়ছে
মাটির বুক শুষে নিচ্ছে জল
পড়ন্ত দিন নিভে যাচ্ছে
অন্ধকারের কলস ভরে ধুয়ে নিচ্ছি গা।

তুমি কি আজ অগ্নি দিতে পারো
পোড়া শস্যের তীব্রতম ঘ্রাণ
শুকনো পাতার তলায় শুয়ে থাকা
দগ্ধপ্রায় ঘাসপোকাদের প্রাণ !

যখন তোমার দহন নেই কোনো
আমার থেকে দূরেই থাকো তবে
বিক্ষত এই বুকের ভেজা জামা
রোদ্দুর নেই, কোথায় মেলে দেবো!







বিপন্নতা

জল-নিবিড় বেঁচে থাকার বিপন্নতা
চ্যুতির ফাটলে উগরে দিচ্ছে ক্ষোভ
অপরূপ মায়াফুল দুলে উঠছে
ভেঙে পড়ছে অলীক অশেষ উন্নয়ন
ধ্বংসের পাঁজরে ব্যাধি ও রক্তপাত
বনাগ্নি গতিতে পুড়ে যাচ্ছে সভ্যতা
বিফল কৌশলে মুঠি থেকে
ছড়িয়ে পড়ছে অন্ধকার
সৌরকোষ থেকে বর্ষিত অগ্নিকণা
শুষে নিচ্ছে আর্দ্র নদীপথ
মেধাবী ম্যাজিকের দিন শেষ
এখন স্পর্ধাহীন মৃত্যু ছায়াপথ
বিছিয়ে রেখেছে তার জীর্ণ সামিয়ানা
আমাদের শববাহী গাড়িগুলি
অশরীরী যানজটে আটকে গিয়েছে।







বর্ণান্ধ করে দাও

বর্ণান্ধ করে দাও হে জীবন
দৃষ্টি থেকে তুলে নাও দ্বেষ
দুই চোখে প্রতারণা লেখো ;
যে দেখেছে এ পৃথিবী সবুজ সুনীল
উদয় অস্ত কমলা ও লাল
মেঘের কালো অন্ধকারে আলো
সাতবঙ আকাশে ছড়ানো
প্রবাল প্রাচীর জুড়ে মাছেদের রঙিন সাঁতার
সেই চোখে বৈষম্য এঁকো না
কোনো রঙ ছড়াতে দিও না
শরীরী জেব্রার মতো অস্তিত্ব জুড়ে
মিলিয়ে দাও কালো ও সাদা।
দৃষ্টি রাখো অনন্তের মূলে
সেইখানে ভালোবাসা গুঁড়ি মেরে বসে
আমাদের সবার ভিতরে।
বর্ণহীন কুয়োজলে ছায়া হয়ে মেশে
অক্ষ ও দ্রাঘিমারেখা এই পৃথিবীর
অবিশ্রান্ত বালতিরা নামা-ওঠা করে
এইসব দৈর্ঘ্য ও প্রস্হরেখা জুড়ে
অন্তর্দৃশ্যে এঁকে দাও দীর্ঘতম প্রস্হিত আল্পনা।