শুভ্রাশ্রী মাইতি
দাঙ্গা
অসুস্হ
বাচ্চাটার খাবার কিনতে গিয়ে
আর
বাড়ী ফেরা হয়ে ওঠে নি ফকরুণের।
‘জয় শ্রীরাম' ধ্বনির উন্মত্ত
হিংস্রতায়
এফোঁড়
ওফোঁড় করা গুলিতে বুকের ঘাসজমিটায় রক্তলাল মানচিত্র।
মন্দিরের
ভাঙা দেউলে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠেন ধনুর্ধারী রঘুবংশী।
পাঁচ
আর সাত বছরের বাচ্চাদুটোকে বাঁচাতে
জ্বলন্ত
বাড়ীর ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেয় অঞ্জলি--অঞ্জলি শর্মা।
নিচে
মশালের লেলিহান শিখায় ‘আল্লাহ আকবর'-এর কানফাটানো চিৎকারে
রক্তমাখা
খোলা তলোয়ারের ঝনাৎঝন ঝংকার।
পোড়া
মসজিদের ছাই মেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন হজরত নবী।
রক্তমাখা
নামাবলীর আড়ালে ফকরুণের এতিম বাচ্চাগুলোকে লুকিয়ে
রাতের
আঁধারে দুটো গরম ভাত খাইয়ে দেয় ওপাড়ার শাস্ত্রীজী।
মেঘের
বুকে পালক হয়ে নামতে থাকা অঞ্জলির ভয়ার্ত শিশুগুলোকে
বিশাল
বুকের আগুনউত্তাপে সেঁকে স্নেহচুম্বন দেয় ওসমানচাচা।
ভাঙা
মন্দিরবেদী আর পোড়া মসজিদ মাজার ছেড়ে
রক্তস্নাত
দাঙ্গার অলিগলিতে হাতে হাত রেখে দাঁড়ান ঈশ্বর আর আল্লা।
আধপোড়া
কোরান আর গীতার ছেঁড়া পাতাগুলো কাটা ঘুড়ির সীমাহীন বন্ধনহীনতায়
একসাথে
উড়তে থাকে--উড়তেই থাকে অম্লান হৃদ্যতায়।
শুধু
হাতে অস্ত্র আর চোখে ধর্মের ঠুলি বাঁধা বলে
আমরা
সব দেখেও কোন কিছু দেখতে পাই না।