সুমনা পাল ভট্টাচার্য্য
ঋণ
----
পদ্মপাতার শরীরে বুনেছি মোম অক্ষর
জীবনের টলটলে বাঁকে জলছোঁয়া জীবন
মৃত্যূ গুছিয়ে রেখেছি সাঁতারু পোষাকে
মাথা দিয়ে মেপেছি আপ ডাউন স্ট্রোক...
একটুকরো ঘুমের কাছে ঋণ রেখে গেলাম
তোর বুকের ডেবিট কার্ডে পাসওয়ার্ড খেলা।।
---------------------------
বোধ
----
মরশুমি মৌতাত ঢালতে ঢালতে
পাখনায় এখন শুকনো খড়
মরুভূমি চিবুকে তোর রসালো ঢেঁকুর
গলার নালি বেয়ে বাষ্প সাইরেন
এভাবেই প্রতিদিন...
তোর টগবগে যৌবনের ঘরে
চৌকাঠ ছুঁয়ে পড়ে থাকে
আমার অকাল বার্ধক্য -
---------------------------
পারলৌকিক ক্রিয়া
------------------
মাঝরাতের বালিশ চিবিয়ে খায় দাঁতাল অন্ধকার
বাতাসে ধূপের গন্ধ, পথময় ছড়ানো বিষন্ন খই
আমার কানের লতি বেয়ে রক্ত চুঁইয়ে পড়ে
বালিশের বুক ভাসে, বলো হরি... হরি বোল...
পরজন্মের ঘরে তখন নতুন আসবাব সাজছে
এ জন্মে তোর বুক বেয়ে আমার পরলোক মই
নুন ঠাসা চিবুকে আদুরে তিল গলতে গলতে
রাতের চাদর জুড়ে লিখে যায় এমনই
এক
পারলৌকিক ক্রিয়া
এভাবেই...
আধছেঁড়া ঘুমে
রোজ রোজ...
------------------------------
ঘোমটা খোলো কুয়াশা
----------------------
বাউল মন এখন সবজেটে গাঙফড়িং
মাস্তুল আকাশে নীড়ভাঙা ঝড়
একতারা আঙুলে অজস্র ছায়াছবি
নোঙরের খোঁজে রোজ ঘরে ফিরতে দেরি হয় বড়
চিঁড়ে দই হয়ে মিশে যায় রাত, দিন, রাতদিন...
ঘরের ভেতর ঘর, তার ভেতর ঘর
এক্কাদোক্কা খেলায় অপটু সময়
শীতের রোদ পুহিয়ে নেওয়া ছায়াঘরে
বায়োস্কোপের অপেক্ষা
পাশ ফিরে শোয় ভোরের স্বপ্নেরা
ঘোমটা খোলো কুয়াশা....
---------------------
ঋতুময়ী
---------
আজকাল
মেয়েটির বোরোলিন সংসারে বড় ওঠাপড়া
তানপুরার তারে
ধুলোর কান্না
তবু
ছাদ জুড়ে বৃষ্টি নামলেই
সে রাধা হয়...
ব্লাউজ ঢাকা আঁচলে ওঠে মল্লারী ঢেউ
সিঁদুর গলে পড়া অভিসার
কপাল, নাক,থুতনি বেয়ে
নামতে নামতে
অন্ধকারে কলঙ্ক চেটে নেয়
রজ:স্বলা হয় বর্ষার ঘর...
ধুকপুকে খাঁচার সব চাবুকের দাগ
কেমন আতর ঠান্ডা মেখে বলে ওঠে
"ভালবাসো নারী
ভালবাসো"....
---------------------------