মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

রঞ্জনা রায়




রঞ্জনা রায়

হিস্ হিসে্ অন্ধকারে                                      

আলো নয় আলোর বিপরীতে
দাঁড়িয়ে দিক খুঁজি ।

শাঁখা- সিঁদুরের চৌখুপী মাপে
মাপসই হয় না যখন যাপিত জীবন
তখনও কি প্রেম চোঁয়ানো একবিন্দু জল
শুধুই মেটামরফসিসে্র নামান্তর ?

আন্তিগোনের হাহাকার , অম্বার অগ্নিদহন
বুকে নিয়ে লড়াইয়ের হাতিয়ার খুঁজি
বারোশো বর্গ ফিটের হিস্ হিসে্ অন্ধকারে ।





বন পলাশের লীলা

অনেক দুরন্ত রাত ডিঙিয়ে এসে ,
বসলাম এই চন্দ্রানী সৈকতে ।
এখানে ঝাউবনের কানে কানে ,
জ্যোৎস্না কথা বলে ,
ঘরের ঠিকানা ভেসে যায় উত্তাল স্রোতে ।
বন্দরে থামতে চাওয়া জীবনের পাতায় ,
অনেক অক্ষর জড়ো হয়
আবার মোছেও ঢেউ এর ,
অবিরত তাড়িত তাড়নায় ।
অনন্ত ইতিহাস সাক্ষী বর্ণহীন খাতা ,
জলপরীর সোনালী ডানায় ,
নীড় খোঁজা পাখির , কল্পবিলাস কবিতা ।
জল হতে চাওয়া জীবনের মত ,
গড়িয়ে চলে সময়ের দীপ্ত রথ ,
শুধু বুঝিনা পড়ন্ত বিকেলে ,
বন্য পলাশ কেন ঢেকে দিয়ে যায়
    এক অচেনা সর্পিল বনপথ ।





নন্দিনী

নন্দিনী তুমি কি চাও ?
কি দেখ তুমি সকলের পিপাসা-ডুবুরি চোখে ?

তোমার উষ্ণ আলিঙ্গনের ছোঁয়ায় ,

কত রূপকথা ছবি আঁকে ওদের মনে ।

তোমার দু চোখের গভীরতায় ,
কত মাছ , মাছরাঙা হয়
দিনরাত শিকারের অপেক্ষায় ।

নন্দিনী , তোমার চুলের লাস্যে রাতজাগা প্রজাপতি কথা ।

তোমার হাসিতে ম্যাজেন্টা উচ্ছ্বাস ,
শিপ্রানদীর বিহান মুখরতা ।
তোমার লালশাড়ির নীলাম্বরী আঁচলের ভাঁজে ,
অনেক রাতপরীর বরফ স্বপ্ন ব্যাথা ।

নন্দিনী , রাতভোর ভালবাসার অবির মেখে ,
ভালোবাসার নদীতে এ কোন বিভ্রমী রাসলীলা ?
মাতালের প্রলাপের মত বেঁচে থাকার নেশায় ,
একাকী পান্থপাদপের নাগরিক  ছলাকলা ।
প্রেম ! কখনও সে ফুটন্ত টিউলিপের নির্ঝর আনন্দ ।
যান্ত্রিক উষ্ণতায় একবারও কি উচ্চারিত হয় ,
      স্বরচিত রতি ছন্দ ?





আমি

একটু একটু করে আমি হারিয়ে যাই
আমার পরিচিত রঙেদের  আড়ালে ।
একটু একটু করে আমি পথ খুঁজি
সেই নকশি কাঁথার অচেনা জঙ্গলে ।
আমার আজ , দেখেছিল সূর্য ওঠা ভোর ,
কৃষ্ণ প্রিয়া রাধিকার লাজে ।
আমার কাল , শুনবে কি বর্ষার পায়ে ,
কখন কনক নূপুর বাজে ?
কাল  আর আজ মাঝে প্রশ্ন যতি ,
ভবিষ্যৎ কতটা অক্ষয় বর্তমান ?
অমাবস্যার অন্ধকারে শুরু হয় একাকী চাঁদের ,
পূর্ণতার অভিযান ।
আবহমান প্রবাহে সৃষ্টির ঘূর্ণি পথে  ,
বিন্দুতম এই আমি ;
চাই বহুত্বের আস্বাদন খুঁজি অনন্ত ব্রহ্মময় প্রাণভূমি ।





কালবৈশাখী

ঐ দুরন্ত কালবৈশাখী ছুটে আসার মুহূর্তে ,
আমি তাকিয়েছিলাম সেই নিমগ্ন চোখের দিকে ;
সেই শান্ত চোখের ঘন ছায়ার আশ্রয়ে ,
  উন্মত্ত তাণ্ডবের ছন্দপতন ,
সৃষ্টি বীনায় স্রষ্টার তান।

অনুভবে ,
 এক দৃঢ় আলিঙ্গনের ,
ঐশ্বর্য  উৎসব ।
মগ্নচেতনায় মন্দ্রিত হয়

পবিত্র গায়ত্রী স্তব ।