মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

রত্নদীপা দে ঘোষ




রত্নদীপা দে ঘোষ

(৭ ফেব ১৭)

দিলরুবা হে
কতখানি গভীর গোলাপি তোমার
আস্তরঙ শুধু আলাপ দিয়েই
এক আহ্লাদী পক্ষীবিশারদ
এমন ফুরফুরে মেঘ
ক্যাপশন ধোয়া ভঙ্গি যেন
রীতিমত গল্পের জঙ্গিরা দলবেঁধে
গোলাপ

হলদে ফোটাচ্ছে আমাকে
আমিও তৈরি

তুমিটিকে নিয়ে মগ্ন হওয়ার মুহূর্তে
মহাকাশের কালোগোলাপ এক তেষ্টার হাজার পিয়াসা ভেঙে
নিটোল ঝকঝকে বৃতিঅন্ত ভোরের দিকে লালগোলাপ

এক অনন্ত পাগলামির পোশাক ছাড়া আর কিছুই নয়






(৮ ফেব ১৭)

এসো একবার শরাব ও সাকির লম্বা দৌড় ঘুচিয়ে
এসো একবার তালাদ মামুদের গজল কুড়িয়ে
এসো জটিল প্রবন্ধের ছাদ উড়িয়ে
এসো প্রতিমার মায়া কাজল আর কান্না মুছিয়ে

আসবে কি ?
স্মৃতির বান্ধবী হোয়ে ?
আসবে কি ?
মায়ের আঁচলগন্ধের ঘ্রাণ বেয়ে ?
আসবে কি ?
ঠাকুমাঝুলির আঁশরাক্ষস নিভিয়ে ?

আমি ভবঘুরে আছি
এসো একবার
এসো তোমার চোখের আর ভুরুর নাটিকা সহ
তোমার মন আর মননের খুনসুটি সহকারে
এসেই যাও

আসবে কি অকুতোভয় ভিক্ষাপাত্রটি বুকে ?






(১১ ফেব ১৭)

একটা জলজ্যান্ত কথা
কত মানুষকে বিকলাঙ্গ বানিয়ে দিতে পারে
অথবা একটা মৃতকথাই  তার তেজস্ক্রিয় রয়াসনে
একটি শিশুকে কথাহীন


কোনো কথা ফ্যাসিস্ট
কোন কথা মুকুটহীন রাজা
কোনো কথার অর্থ মাইক্রোফোন
প্রতিবাদহীন গমগমে জড়ানো


অমৃতকথা সেই কথাটি
যাকে রাখতে মোমবাতি জ্বালাতে হয় না
যাকে রাখতে সর্বস্বান্ত হতে হয় না
যাকে রাখতে শুধু আলুথালু হাওয়া বাতাস

যে কথার কোনো দেশলাই নেই
যে কথাটি ভারি অলঙ্কারহীন
যে সব কথারা আমৃত্যু আগুন
কোনো অপরাধ ছাড়াই






(১২ ফেব ১৭)

জড়িয়ে ধরলেই সেই শুভ অলৌকিক
তুচ্ছ জ্ঞান করে শরীর
চেতনার নগরী নবীন আমাকে ধ্যানগ্রামের দিকে

ক্রুরতাহীন লালসাহীন
বীতশোক এক সঙ্কলনের দিকে
সর্বদুঃখনাশিনী কবিতার দিকে
সন্তানধারণের ভিক্ষামায়ের দিকে
চরম স্মিতঅঙ্গারে ভাসিয়ে

তাকে জড়িয়ে ধরলেই মৃতসঞ্জীবনী
নিভে যাবার আগে হঠাৎ
জলে স্থলের গভীরে জেগে ওঠা
মাটি আর পদ্মফুলের যৌথভ্রূণ
আর বিকিরণের সিংহাসনে
আমাকে চরম হাসিয়ে কাঁদিয়ে

খুব কি বিপজ্জনক এমন বিন্দুবিন্দু
চন্দ্রবিন্দুকে জড়ানো ?






(১৩ ফেব ১৭)

ঠোঁটের কণ্ঠে তৈরি হয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত
যা আপাত গোলাকার তন্দ্রার গড়ন
যার শরীরে লেপটে আছে মহোৎসব কোনো
যাকে খাবার জন্যে লাবণ্যময় আঁখি পল্লব
যাকে খেয়েও শেষ করা যায় না এমন মগ্ন কথোপকথন
যার ডানদিক শব্দহীন
যার বাম দিকে উষ্ণনিঃশ্বাসের ছায়া
যে নিজে কোনো গান নয়
অথচ গানময় স্তবের গা-ঘেঁষা
যার আসার পথটি ব্যাপক নির্ঝরিণী
যার গমনপথটি শ্রীরাখা নামের লতায়পাতায় কুঞ্জদানায় ঘেরা
যে নিজেই এক চন্দ্রবংশ অথচ তার সন্তান সূর্যঋণে গড়া
যে আগুনবৎ তরল
যার মৃদু কোটরটি পাখিদের কোমল গরল
যার আলো আলেয়ার ন্যয় কৃশ
যে নিজেই একশত কিলো ওজনের স্বপ্নশোষক
যার অজস্র বরুণ গুনে শেষ করা যায় না
যে তলে তলে শুভ উড়ালের উড়ন্ত ভৈরব
যার নিবিষ্ট পাঠ অশোকতরুর মূল
যার কাণ্ড প্রসঙ্গে বারবার এসে পড়ে মন্ত্র আর বিজ্ঞানের বিবাহ সংলাপ
যিনি নিজেই এক বিচ্ছেদ রূপদক্ষ দহন
যার অন্ধকার জীবন আর সাহিত্যের মর্মঅয়ন
যার ভৌগলিক শাসন থেকে দেবতারাও নিজেদের মুক্তি দিতে পারেনি
যার মুক্তির দাবীতে গড়ে উঠছে বিশাল সেনাপতির সাঁজোয়া দূতাবাস
যার আশেপাশে একটিও নদী নেই সাগর নেই
অথচ তারই টলমল থেকে ভেসে আসছে
জল ঝাপটানির এক দুর্দান্ত স্মৃতির হ্রদ