শাকিলা তুবা
বানিজ্য
সবগুলো বিচ্ছিন্ন প্রহরকে যে চোখে দেখা হয়
আমাদের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে সেভাবেই
আমরা হৃদয় বন্দনা করেছিলাম প্রথমতঃ
নির্দেশনা মানবার জন্যে ম্যাপ ছিল না
তাই এবারও ভুল হলো ঠিকানা।
আমরা স্বান্ত্বনা দেইনি কেউ কাউকে
শিশুকে চুরি করে খেয়ে ফেলেছে মা
এই অনুভুতি নিয়ে আমরা মুখ বিকৃত করেছি
একজন পালিয়ে গিয়েছিল অন্য মানুষের হাত ধরে
তাদের যুক্তছায়া আমাকে আস্বস্ত করেছে।
পৃথিবীর সকল প্রাণী উলঙ্গ, এমন কি গাছও
ওদেরকে দেখে একদিনও বলিনি, ছিহ্ তোমরা ন্যাংটো কেন!
অথচ বিচ্ছেদকালে ওকে কি অসভ্যরকমের উলঙ্গ
দেখাচ্ছিল!
অতঃপর আমি তুলাচাষীদের কথা ভাবতে বসলাম
নীল জামাটা আদৌ স্বর্গ থেকে আসেনি। স্বর্গ একটা
স্বস্তির নাম।
প্রার্থনা-গান
এই যে এত এত কথা, ওহ ঈশ্বর
সব যেন চাপা পড়ে কালের ছোবলে
ইথারে রয়ে গেলে কিছু শপথ
লজ্জা পাবে, লজ্জা পাবে অর্বাচীন জন।
অচীন বৃক্ষ শাখে উড়ে বেড়াবার সখ
সেন্ট মার্টিনের না জন্মানো ঘাসে
আমাদের উড়ন্ত পায়ের ছাপ
মুছে দিও, মুছে দিও মহাকাল।
আমরা লজ্জা পাচ্ছি নিজেদেরকে দেখে
পাপ নিও না, পাপ দিও না
মাকড়শার বিস্তৃত জাল রক্তকণিকা থেকে
তুলে নিও, ভুলে যাওয়া কথা ভুলে যেও।
পুণরায় পুনর্বসু
শক্ত এক পেশী ঘিরে শুরু হয়েছে উৎসব
ও তো কখনো ছিল না শুক্রের জাতক!
শুক্র মানে বধ
উপবৃত্তাকার ছলনা রোধে পৃথিবীর বোন
হত্যা করে চলে বৃত্তের প্রতি বিন্দু।
আমরা জানি এই না ঘুমানো আদতে ঘুমছল
তার বেদনা নেই, ঘাম নেই
অনেককাল শুয়ে ছিল কামজ্বরে
বিকারগ্রস্থ পুরুষ এক মহা ঝামেলার গন্তব্য
একশ আশি দিনে পৃথিবী ভ্রমনের স্মৃতিতে কাতর।
মাটির খুব কাছাকাছি চলে এলে
ভেতর থেকে উঠে আসা মাংসের গন্ধে
অবিমৃশ্যকারী অমাবস্যায় পূর্ণিমার ঘোর লাগে
বীরের মুষিকগাঁথা কাব্য-কাহিনী থেমে যায়
এই নক্ষত্র দিবানিশি একজন সেক্স সেলার হয়ে
বাঁচে।
রাত
রাতের ভাঁজভাঙ্গা গাউনে
প্যারানরমাল দৌঁড়—
রাতটা এই শহরের সমান ছোট
অথচ দৌঁড় বিস্তৃত পৃথিবীর দিকে
রাত মানেই নারী-পুরুষের সঙ্গম নয়
এরও আছে দেখবার চোখ
বুঝবার ভাষা
রাত দিগন্তের সমান্তরাল,
দিনের বিপরীত
কল্লোলে-হিল্লোলে যত পাতা ঝরে যায়
তার সবটুকু ধরে রাখে বুকে
তবু তাকেই এত ভয়
তাকেই এত ভালবাসা।
দীর্ঘরাত মানে উৎসব আমেজ
নাইটগাউনের ভাঁজ ভাঙবার সরব প্রক্রিয়া।
অভিযান
দাও সুমাত্রার ঐ জলটুকু,
দাও তো আঙুল ডোবাই
পুড়ে যাওয়া নখে
চলো সুখী ছবি আঁকি।
কেরিনসি সৃষ্ট অগ্নুৎপাত
কিভাবে ঝলসে দিয়েছে স্তনাগ্র
এসো শিহরণ চেনাই। চেনাই
কেঁপে ওঠা তিল;
অতঃপর, তিলোত্তমা।
রাখো মুখ রাধিকা নদীতটে
ভাঙ্গন হোক জলঢেউয়ে
উৎসমুখ খুলে উড়ে যাবে জোনাক
কলমের নিব চেনাবে কালির অক্ষর।