সৈয়দ রনো’
কাব্যকলায় বিজ্ঞান
হৃদয়ের ঘাসচাতালে বসেছিলো
প্রলুব্ধ বিরহী হৃদয়
হাইরাইজ ভবনের অস্বচ্ছ কাঁচ
অটবির কারুকার্যময় দরজা
জ্বলস্ত সিসার দহন
আটকাতে পারেনি কিছুই
প্রসারিত বরফশীতল হাত
কমনীয় স্পর্শে ছুঁয়েছে উলঙ্গ শরীর।
মনোমন্দিরের রন্ধনশালায় ঢুকে শৈল্পিক মন
যাপিত জীবনের কোলাহল পিছে ফেলে
সটান দাঁড়িয়েছি স্ট্যাচুর মখোমুখি
বৈজ্ঞানিক তেজস্ক্রিতায় রাঙ্গিয়েছি দু’হাত
হৃদয়কে খণ্ড বিখণ্ড করে বানিয়েছি কবাব
তিক্ততায় ভাতের বদল খেয়েছি ওবামা’র বড়ি।
ছুঁয়েছি জীবনবোধের তলানি
আমি এখনো কবিতা লিখি
কবিতা লিখি কল্পনার ঘোরে
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও
কাব্যিক চিত্রকল্পে সাজাই
আকাশ বসতি
ইউরেনাস নেপচুন প্লুটো’র
ধর্মযাজক আমি
প্রতিনিয়ত নাসা’র বিজ্ঞানীরা
মেরামত করে আমার চিন্তার জগত।
রুবাইয়াতে আকুতি
হাঁক তুলে তুই
দিসনে রে ডাক
পাতিস না তুই প্রেমের ফাঁদ
ভাবিস না মন
হাতেই পাবি
সুদূর দেশের সোনার চাঁদ।
চাঁদ বদনের রসের ছোঁয়ায়
ভাবিস না মন প্রেমেই সুখ
সুখের নদে স্রোত বয়ে যায়
ভাঙ্গে আমার শীতল বুক।
দুখের মাঠে সুখের চারা
বপন করি এই ধরায়
ব্যর্থ প্রেমে জ্বলছে আগুন
পুড়ছে দেহ সেই খরায়।
শেষ বিকেলে সাকি-শরাব
আনন্দ সুখ কিচ্ছু নাই
খোদার শানে ধন্য হলো
জলসা ঘরের তুচ্ছ বাঁঈ...।
ভাবের পদাবলী
ধার করা আলো নিয়ে
চন্দ্রটা হাসে
ধার-দেনা পরিশোধে
চোখে জল ভাসে।
দখিনা বাতাসে সুখ
কোজাগরি চাঁদ
মায়ার বাঁধনে দুখ
মরণের ফাঁদ।
নিশিদিন কতো ঋণ
কাঁদে শত লোক
ছলনার গান ধরে
কামনার শোক।
শোকের পাঁজরে রাত
হাসে তার ছায়া
বিবেকের দুর্দিনে
কাঁদে তার মায়া।
মায়ার বাঁধনে প্রেম
স্বর্গের সুখ
বিরহ জ্বালায় কাঁদে
অভাগার বুক।
নাকে কানে খত দেই
দেই কানপড়া
যাতনায় বেঁচে আছি
বাস্তবে মরা।
ভাতের খোঁজে লাশ
চলছে দেশে ধ্বংস খেলা
হচ্ছে মানুষ খুন
গরিব দুখি পাচ্ছে না কেউ
পান্তা ভাতে নুন।
নুন আনতে পান্তা ফুরায়
ভাতের খোঁজে লাশ
রাজনীতিতে ধরছে পচন
বললে কথা নাশ।
নৈতিকতা বদ্ধ খাঁচায়
ঘুম পাড়ানির গান
প্রতিবাদের নাই অধিকার
ঝরুক যতই প্রাণ।
নীতিহীনের চলছে শাসন
শেকল পরায় হাতে
জোর জুলুমের শাসন চলে
শোষন চলে রাতে।
ভালো-মন্দের নাই ভেদাভেদ
খারাপ লোকের কদর
বদ্ধ ঘরে ঘুরছে শ্রমিক
পায় না খুঁজে সদর।
খাট ছাড়াই শ্রমিক ঘুমায়
কৃষক ঘুমায় মাঠে
শোষক যারা সুখেই আছে
রাষ্ট্র ঘুমায় খাটে।
সমকালীন ছড়া
পেটের কাঁন্নায় জ্বলে ক্ষুধার লেলিহান
তন্দ্রাহীন মধ্যরাত যেনো শশ্মানপুরী
মশাল হাতে ছুটে পোয়াতীর ভূড়ি।
ছলনার খেলা দেখি টেক্কার হাটে
তসবি তাহলিল চলে মাঠে ঘাটে
জাতি-ভেদ তুলে দেই মুর্দার খাটে
অভাগার ক্রন্দনে জনরোষ হাটে।
দুখিনী দুঃখ পেলে গালে দেয় হাত
ভণ্ডও টাকা হলে সাজে ভালো জাত
কাব্যের সুধাপানে মাথা ঘুরে কাত
তৃষিত হৃদয় কাঁদে জেগে থাকে রাত।
আসলকে রেখে করি নকলের খোঁজ
অনাবাদে কাটে দিন করি ভুড়ি-ভোজ
রেডিমেড মানুষের খেলা দেখি রোজ
কবি সেজে দাম নেই কবিতার খোঁজ।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
ভাত চেয়েছি, লাশ এলো
খাবার রেখে গোর খুঁড়েছি
ভাতের বদল কান মলো।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
লাশের উপর লাশ দেখি
সভ্য যুগে বুলেট বোমায়
মানুষ মারা কোন নেকি?
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
প্রপাগাণ্ডার বইছে ঝড়
সত্য কথার নাই হেফাজত
মিথ্যে কথার জাগছে চর।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
হচ্ছে খালি মায়ের কোল
শ্রমিক ইমাম শিশু মরে
কান্না-কাটির শুনছি রোল।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
শোষক দেখায় তাদের বল
সব শোষিত আসছে তেড়ে
খেল দেখাবে তাদের দল।
সকাল দুপুর সন্ধ্যা শেষে
নৈতিকতার যুদ্ধ চাই
নীতি নিয়ে শহীদ হলেও
একটু তাতে দুঃখ নাই।
লাশ
মানব সেবায়
আকাশ জমিন
সৃষ্টি সেরা মন
মনের ভেতর পুড়ছে সদা
যেমন পুড়ে বন।
মিথ্যেবাদী
পাচ্ছে কদর
সত্য বলায় দোষি
জলের পিয়াস রক্তে মিটে
মানুষ মেরে খুশি।
জ্বলছে আগুন
ঘরে ঘরে
জ্যান্ত মানুষ চিতায়
তিক্ত কথার বক্বকানি
মুখ ভরছে তিতায়।
দেখছি এতো
দেখবো কতো
দেখতে ফুরায় বেলা
ড্রেনের ভেতর লাশ দেখছি
এতই অবহেলা।
পায়নি লাশে
দাফন কাফন
আগুন কিংবা মাটি
আন্দোলনে মরছে স্বামী
লাশের খোঁজে হাঁটি।
ভ্যালেন্টাইন ডে
ভ্যালেন্টাইন দিবস আসে
নব বধূর সাজে
পুব আকাশে সূর্য হাসে
ঘোমটা পরা লাজে।
মাথার মগজ ভাবতে শেখায়
ভালোবাসার কলি
জ্বালায় জ্বালায় অঙ্গ জ্বলে
প্রেমে হলাম বলি।
সৃষ্টি জগৎ ঘাটতে গিয়ে
দেখি প্রেমের ছবি
প্রেম পিরিতির পয়ার লেখে
হাজার ভাষার কবি।
প্রিয়ার স্মৃতি গুমরে কাঁদে
ভালোবাসার দিনে
জন্ম আমার ধন্য হলো
প্রেম সোহাগের ঋণে।
পৃথিবীটা প্রেমের বাগান
আমার প্রিয়ার ফুল
মায়ার বাঁধন শক্ত করে
খুঁজছি শুধু কূল।
লোক-লজ্জা শাসন বারণ
মানবো না তো কিছু
আমার প্রিয়া যেথায় যাবে
আমি যাবো পিছু।
ভালোবাসার দিবস এসে
মন করেছে উঁচু
হৃদয় দিয়ে বাসছি ভালো
ভাববো নাতো নিচু।
সুখ দুখ দুই ভাই
কান শুনে খুশি রয়
মাথা তাই ভাবছে
মন যাতে সুখী হয়
চোখ তাই দেখছে।
চার দিকে সুন্দর
ভালো রয় বুদ্ধি
দোষ-ত্রু টি ভুলতে
ব্রেন করি শুদ্ধি।
চাঁদাবাজি লুণ্ঠন
প্রতিদিন ঘটছে
ঘটনার চেয়ে বেশি
রটনাই রটছে।
সুখ দুখ দুই ভাই
সুখ থাকে বিলাতে
সৎ হওয়া মছিবত
সুখ থকে কিলাতে।
দেহ যদি ভালো থাকে
ভালো লাগে বস্তি
মন দিয়ে করি কাজ
সুখ পায় স্বস্তি।
দু:খের হাত বড়
সুখটাকে মট্কায়
গলা টিপে ধরে রাখে
পায়ে বেঁধে লট্কায়।
জনতা
খুনাখুনি হানাহানি
নয় কৌতুক
সখিনার বিয়ে ভাঙ্গে
চায় যৌতুক।
মুখে বলে সব ভালো
রটনা রটায়
ভালো সেজে তলে তলে
খারাপ ঘটায়।
দেশ নিয়ে টানাটানি
নেতাদের খেলা
খোঁজ নেয় মানুষের
স্বার্থের বেলা।
দ্রব্যের বাড়ে দাম
পেটে নেই ভাত
সরকার নিশ্চুপ
কাটে না তো রাত।
জবর দখল করে
অন্যের বাড়ি
প্রশাসন নিশ্চুপ
টেনে ছিঁড়ে দাঁড়ি।
চাঁদাবাজি সন্ত্রাস
নেতাদের কাজ
কেঁদে মরে জনতা
নেই তার লাজ।
জাগো নারী
জাগো নারী জাগো নারী
জাগ্রত হও
রাত কি হবে না ভোর
কেন ঘুমে রও?
আকাশ বাতাস জাগে
বহে কতো সুর
ঘুমিয়ে থাকো যদি
দেখবে না নূর।
আলোর পসরা বিলায়
হাটে কতো জন
নারীর মহিমা হীনে
পুড়ে যায় ধন।
চারিদিকে হাঁক ডাক
পাবে নারী বল
পুরুষের দোষে নারী
করে কতো ছল।
ঘর কোণে বসে নারী
থাকবে না আর
অধিকার কেড়ে নেবে
ধারবে না ধার।
নিজ পায়ে দাঁড়িয়ে
চালিয়েছে দেশ
দশদিক আলোকিত
লোকে বলে বেশ!