কাকলি দাশ ব্যানার্জী
পাঁচপর্ব
জন্ম পর্ব
থেকেই দেখেছে
প্রতিদিন বাবু শিবিরে
বাধ্যতামূলক উত্তাপে
পূর্বসুরীদের উদ্ভট প্রশ্রয়
আঁধার পর্বে
প্রতি রাতে যন্ত্রণাকে সামনে দাঁড় করিয়ে
খদ্দেরকে গালি দেয়
অষ্টাদশী গণিকা শরীর ।
মৈথুন পর্বে
মন কখনো আমোদের ফড়ে হয়ে
চিরজীবী কষ্টদের বুকের অসুখ সারাতে
সত্যিকার ভালোবেসে
নিরাভরণ দেহটাকে নৌকো বানিয়ে ভাসিয়ে দেয়
তারপর গলুই ভরা পাঁক তার সম্বল ,
অধিকার পর্বে
আঁশটে হিংসা-বিষ
আর ঘেন্নার রাসায়নে
ফুলে ফেঁপে ওঠে নির্মম অভিমান -
লাল রঙা আকাঙ্খা
তখন বিকল্পহীনভাবে অবহেলা ছুঁড়ছে
অধিকারের চাঁদমালায়
শূন্য পর্বে হাপিত্যেশ করা উপশম
ইতিমধ্যে মেরুকরণের মলিনতায়
লোককথার আলপথে ...
একটা বিষবৃক্ষ পুষছে জঠর
গুমোট ইচ্ছেরা
আগুনে পুড়িয়ে দিলো
আগামী ,
এঁটো বাসনে গরম ভাতের শরীর
বেড়ে দেওয়া যায় না
লৌকিক জন্মদাগ যে রৈখিক ।
হতভাগিনী
জীবনকে জবাব দিলে তুমি-
করিডোর পার হয়ে
অবেলায় হঠাৎ পেরেকের সাথে ভাব ,
নির্বোধ আড়াল
অন্তর্বাস খুলে দাঁড়িয়ে পড়লো
হেঁটে আসা পথের সামনে
অনিবার্য ভাবে উৎসুক চোখমুখ
অথৈ প্রশ্ন নিয়ে
ট্রাপিজের খেলায় মেতে উঠলো সাথেসাথেই
তল্লাটে তোমার নিজের হাতে গুছিয়ে রাখা আর্তনাদ -
নিরীক্ষণ করছে জোড়া জোড়া চোখ
ষড়মুখ শুষে খাচ্ছে মেদবতী গুপ্তকথাদের
সব কথা দুহাতে সরিয়ে
গর্ভধারিণী এসে দাঁড়ালেন ,
চারকাঠির চরে
ডাক দিলেন ,
"খোকা খাবি আয় ,
সেই ছোটবেলার মতো -
আমার হাতে ছাড়া তুই তো খেতিস না
দেখ কত সুন্দর করে পিণ্ড মেখেছি ।"
নিরুত্তাপ ঈশ্বর
রক্তাক্ত দলাপাকানো শরীরটা দেখে
সারা দেহে শীত উঠে আসছে ,
চেতনারা দাঁড়িয়ে দেখছে
অনুভূতিরা কেমন মাতৃভূমি ছেড়ে বেরিয়ে আসছে
মিছিল করবে বলে ,
ওই মিছিলের মধ্যে ছদ্মবেশে থাকবে
চাতুর্যের মুখ ,
আর সুযোগের দৃষ্টি
ওরা জানে না মোমবাতির ক্ষীণ আলোতেও প্রকট হচ্ছে
ওদের বিজ্ঞাপনের ছক ,
উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত
কলরব হবে
সপ্তাহ জুড়ে
শরীরটা কিছু বাদে নিয়ে যাবে মর্গে
ছিন্নভিন্ন শরীরটাতে আবার কাটাকুটি খেলে মাপা হবে
কোথায় ক'গালে খুবলে খেয়েছে নেকড়েগুলো
তারপর শৌখিন শবযাত্রায় চমৎকারভাবে
জ্যান্ত ফুল চাপানো হবে
দেহটার উপর ,
ওর মুখ সাদা চাদরে ঢাকা
একবার খুলে দেখো
পাঁশুটে দৃষ্টি কেমন ঘেন্না ছুঁড়ে দিচ্ছে
তোমার আমার দিকে
...
এমন নৃশংস নির্বাসন দণ্ড দেবার পরও খাদক সমাজ
খাদ্যের চুল্লির উত্তাপে নিজেকে সেঁকে নিয়ে
জমকালো ফুটেজ পেতে
ছড়িয়ে দিচ্ছে অলীক শোক ...
ভ্রুক্ষেপ হীন নিরুত্তাপ ঈশ্বরের
অভয় দেওয়া হাত তবু বলে
তোদের ভালো হোক ।