প্রিয়াঙ্কা ভুঁইয়া
নতুনের আবাহন
প্রতিটা সূর্যাস্ত জমায় অভিজ্ঞতা
গোধূলির আবিরে,
কয়েকটা নক্ষত্র নীরবেই খসে পড়ে রাতের
তিমিরে;
অজ্ঞাতনামা কিছু বুনোফুল জলস্রোতে
আসে ভেসে,
কিছু উপন্যাস গন্তব্য শেষে উপসংহারে
এসে মেশে।
বছরশেষে হলুদ পাতা বিচ্ছিন্ন বার্ধক্যেরই
পরাভবে,
আবারও এই জীবন এনে দাঁড় করায় চরম
বাস্তবে;
কখনও একমুঠো খুশির জোয়ার, কখনও অবসাদ,
কারোর আসা শিক্ষা হয়ে, কেউ দেবতার
আশীর্বাদ।
বর্ষশেষে মুঠোবন্দী মুহূর্তগুলো
আঁকড়ে ধরেছ তুমি,
জেনো, গভীর ক্ষতে কিছু স্মৃতি আজ
শুষ্ক মরুভূমি;
মানুষ চেনার খেলায় বাকরুদ্ধ আমাদের
ফাটা ঠোঁট,
পুড়বে বলেই তো ভরসার পতঙ্গরা বেঁধেছিল
জোট।
হিমেল চাদরে মোড়া শহর বর্ষবরণ উদযাপনে
মাতে,
বিশ্বাস থাকুক চিরঅটুট, সংশয়গুলো
পড়ুক খাতে;
নতুন বছরের প্রারম্ভে হৃদয় উঠুক
ভরে পূর্ণ উদ্যমে,
কলমে আশ্বাস রেখে অবিচল থাকি জীবন
সংগ্রামে।
নিমজ্জন
নিকষ কালো অন্ধকারে মোড়া অমাবস্যার
আকাশ,
বহুমাত্রিক অসম্পূর্ণতা গ্রাস করে
প্রতিটি পদক্ষেপ,
সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে জর্জরিত
মানবধর্ম -
একটা অসহায় আক্ষেপ আর অক্ষম আক্রোশ
প্রতি মুহূর্তে মনে করিয়ে দেয় অপারগতার
কথা,
চাঁদ খোঁজার ব্যর্থ প্রয়াসে ক্রমশ
হাঁপিয়ে উঠি!
মরীচিকা দেখি, আকাশের মতো প্রকান্ড
মরীচিকা -
পারিপার্শ্বিক বিদগ্ধ সমাজ ঘিরে
পুঞ্জীভূত যন্ত্রণা,
এখানে প্রতিনিয়ত মানুষের মৃত্যু
সাজে নীরবতায়,
শূন্যে মেশে দীর্ঘশ্বাস, উদযাপনের
লেশমাত্র নেই,
শুধুই আছে গভীর আঁধারে নিমজ্জনের
হাতছানি।
অমানিশা
রূপোলি চাঁদকে নিংড়ে খায় এক ক্রমবর্ধমান
অসুখ,
ক্রমশ সে আপন বলয়ের অস্তিত্বটুকু
ফেলে হারিয়ে,
অহমিকার তেজে মাত্রাহীন দাপটের উন্মত্ত
প্যারেড!
মিশকালো অন্ধকারে খেলা করে স্বার্থান্বেষী
আমিত্ব,
ভালোবাসার পরিমাপ সময়ের মূল্যায়নে
অধোগামী;
ঠুনকো আত্মগরিমা, স্বঘোষিত গৌরব
টিকবে ক'দিন?
অবশ্যম্ভাবী পরিণতি, মিশতে হবে ঘোর
অমানিশায়।