হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
ধ্বংসের ঝোড়ো রেখা
মাথা নিচু করলে যতটা আকাশ আঁকা যায়
তার অর্ধেকেরও কম জমি আমাদের সভ্যতার
বইয়ের পাতায় পাতায় অসংখ্য ঘর
স্কুলের দুয়ারে বই হাতে যারা উঠেছিল
তাদের অনেকেরই আজ বয়স হয়ে গেছে
যারা ভেবেছিল স্কুলের ছাদে উঠে মশান
দেখা যায়
তাদের গাছের পাতা কবেই গেছে শুকিয়ে
প্রতিবাদের মতো কঠিন শব্দকণার দানায়
তৈরি
একসময়কার রোজকার মুখস্থ পথের চোখে
রুমাল বেঁধে পোশাক বদলেছে গর্তের
কৌশল
গাছের ভগ্নাংশে চোখ পড়ে আত্মহত্যার
দিনলিপি
আলোহীন স্তব্ধতার পৃষ্ঠায় আঁকা ধ্বংসের
ঝোড়ো রেখা ।
সবুজ রেখায় সূর্য
খিড়কি পুকুরের শীতকালের জল
একধাক্কায় যত ভাগে ভেঙে যায়
আমি ভেঙে গেছি তার চেয়েও বেশি
অনেক ভাগেরই কোনো নাম ঠিকানা জানি
না
আমি শুধু খুব কাছ থেকে জলকে চিনি
আমার পড়াশোনা বলতে শুধু জল
ভাগের স্বাধীন ঘরের
খাটের পায়ার নুপূর বেজে উঠতেই
সূর্যের শিক্ষায় জলের প্রদীপ জ্বলে
উঠল
আমি দেখলাম পাঠশালার গুরুমশাই
মদনমোহন তর্কালঙ্কার বলছেন
বটগাছ পেরিয়ে সবুজ রেখায় তখন সূর্য
উঠছে ।
গল্প
চৌমাথায় এসে গল্পটা
মাথা ছাড়িয়ে অনেকগুলো ভাগে ভাগ
হয়ে গেল
চিরকালের চেনা রঙের বাড়ির গল্প
বৃষ্টির জলে যখন ধুয়ে যাচ্ছে
বটপাতায় তখন সন্ধে নামছে
হ্যারিকেনের আলোয় পড়া হচ্ছে
ডাকপুরুষের বচন পর্ব
অন্ধকার থেকে এবার আস্তে আস্তে সরে
যাবে আলো ।