সমর্পিতা ঘটক
শীতকাল
এই যে শীতকাল গলে গেল টুপ করে
এই যে নিহত নাবিক মন রোদের মতো
অবেলায় বেদনা ছুঁয়ে ছুঁয়ে চলে
অস্তরাগ যে স্থাপত্যে পরিয়ে দিল রোদের টিপ
সে আলোয় দেখতে পেলে কি ক্ষয়ে গেছে
বেলোয়াড়ি রাত, তুমুল ছয়লাপ দিন।
কানায় কানায়
পুরনো ইস্কুলঘরে পড়ে আছে ভাঁজ-করা সবুজ জানলা,
জংধরা টিনের স্যুটকেসে হাবিজাবি আর মেরুন টিউনিক।
পুরনো এইচএমটি হাতঘড়িটার
স্টিলের ব্যান্ড সস্তা, রংচটা।
জানিয়ে দিল সময়...
ভয় হয়! আরও এলোমেলো হয়ে যাওয়ার!
গোছানো হল না সময়, ঠিকঠাক করে...
ছিলও না তাগিদ কোথাও পৌঁছে যাওয়ার,
কোন সিগন্যালে... কোন ক্রসিং-এ অপেক্ষায় ছিলে তুমি,
ইচ্ছে হয়নি আর জানতে চাওয়ার।
শুধু আজ বুঝতে পেরেছি একটি সহজ কথা,
অপূর্ণতা রেখে দিতে হয়,
কানায়,কানায়।
তুমি
যেদিন তোমার হাতে কিছু নেই খড়কুটো
এমন দিনও কাটিয়েছ তুমি ঈশ্বরের মতো,
মুঠো ধান, খুঁটে খাওয়া বাড়ন্ত দুপুরে
হা পিত্যেশ বসে থাকনি এলোচুলে,
জ্বেলে দিয়ে সন্ধে প্রদীপ
গাইলে গান, যে গান সেলিম চিস্তি গাইতেন একলা অবসরে...।
মন্ত্র পড়ে মরা নদীকে জাগিয়েছ তুমি কতবার বেদেনির মতো,
এঁকেছ কপালে বহ্নি বিন্দু পরম যতনে,
তোমার চোখের আলুথালু কাজলপ্রান্তে
সীমাহীন কালজয়ী রাত্রি পায়রা ওড়ায়, আমি দেখেছি …
তুমি! কাছে-থাকা ঈশ্বরী, মানুষ বলে ভুল হয়।