শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

সৌমিত্র চক্রবর্তী


সৌমিত্র চক্রবর্তী

তুই, আমি
আর আমার সারাটাদিন

চোরাগোপ্তা গেরিলা হানায়
সাইবেরিয়ান কনকনে হাওয়া
আছড়ে পড়ছিল স্মার্ট রোদ্দুরে,
ইচ্ছেসত্বেও মোবাইল টাওয়ার হারিয়ে
ঘুমঘুম আমেজে সকাল
তারিয়ে তারিয়ে মাখছিল
খসখসে আঁশরঙা ত্বকে,
তখন তোকে খুব মিস করছিলাম।

আসলে সম্পর্কের এই
প্রৌঢ় সর্পিল সময়ে
টিন এজারের বহুল ব্যবহৃত
নরম শব্দশেল নতুনকরে রাঙায় না,
এখন প্রয়োজনই পড়েনা
বিশ্বাস তৈরির ডাইস নির্মাণ,
এখন শুধু প্রাত্যহিকতায় সমর্পণ।

গুরুত্ব হারিয়ে আর্মড লাইনে
পোস্টেড শীতবর্ম কে ফের এত্তেলা,
ফের ঢাকাঢুকি দিয়ে
আদরে বাঁদর হওয়া,
পশমিনা উত্তাপে এড্রিনালিন
ক্ষরণের লাজুক সেকেন্ডগুলোতে
খুব মিস করছিলাম তোকেই।

বড় আর ছোট ছোট ভুল
স্ট্রেটড্রাইভের সংঘর্ষ মূহুর্ত
বাউন্ডারি লাইনে কট এন্ড বোল্ড
কতদিন ঠেলে দেয় ফাঁসির যন্ত্রণায়,
ফের পরিযায়ী রাত্রির সকাম
আদর সামুদ্রফেনায় বর্ণালি রঙ।

সকাল হামাগুড়ি দিতে দিতে
সাড়ে সাত মাসের প্রসূত ছন্দে
ঢেউ তুলে এগোয় দুপুর আসঙ্গবিলাসে,
অথচ ইচ্ছের গ্রন্থিঠিকানায়
পৌঁছলো না ইথার সমকোণী
তরঙ্গ চূর্ণ ধ্বজভঙ্গ ক্রোমোজম চক্করে,
জানিস তখনই, 
হ্যাঁ, তখনই ভীষণ মিস
করছিলাম শুধু তোকেই ..
শুধু তোকেই ...








নগর যন্ত্রণা

পাখির পালকে পালক বাড়াই
পশুর চর্বিতে ওম,
নিষিদ্ধ জগতের সীমান্তে চক্র আঁকি
দূষিত হাওয়ায় মগ্ন করি শারীরবেলুন।

সারা সময় বৃত্ত অভিমানী খেলা,
মুঠোভাষে টিকটিক
যন্ত্রসূচীর অসহ্য গোঙানির জ্বালা
দুহাতে হৃদযন্ত্র কচলাই কাঁপুনির স্রোতে।

মধ্য সন্ধ্যা উদাসীন ইস্পাত চাদরে
প্রান্তরে মুখগুঁজে অবৈধ মেসেজ
অপমানে ছিন্নমূল সান্ধ্যপথিক
একাই আঁধার খায়, ভাবনা নির্বাসনে।







কয়লা ময়লা কিম্বা সাইকেল

 (১)

কুতকুতে চোখ ঢাকা পড়ে যায় কুচকুচে
কালোর আড়ালে, ঠোঁট জোড়া কারো
দৃষ্টি আকর্ষণ করেনা, লোভের আঙুল
শুধু দেহ পুড়িয়ে শক্তি জমায় কালরাতে।

(২)

হরিভরি পাতা, গ্যাস আর কার্বনের জটীল
সমীকরণ বোঝার সূক্ষ্ম ক্ষমতা দুবেলা কন্দ
খুঁজে ফেরা মানুষদের থাকেনা, আসলে
ওই জীবের মত জন্তুগুলো জানেইনা
তাদের রঙও কয়লা গোত্রীয়।

(৩)

দু এক চিমটি তামাক গন্ধওলা
ক্রিমিনাল রাসায়নিক আর এক বান্ডিল
লোকাল শুঁড়ির ছবি দেওয়া বিড়ির
শুকনো বিড়ম্বনা সঙ্গী করেই ভোর থেকে
কখন যেন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। মামারা
চরম ভিখারীর জাত, হাত পেতেই থাকে।

(৪)

আঁতিপাঁতি ধুলো ঘেঁটে মিলে যাওয়া
আদিবাসী টুকরো নাইলনের ফুটিফাটা
বস্তাবন্দী করেই ছুট...ছুট...ছুট...! শালা
বউটা আবার বাচ্চা বিয়োনোর বিছানায়।

(৫)

টায়ার পাংচার হলে সময়ও পাংচার
হয়ে যায় আপসেই, ক্ষুদি ক্ষুদি চোখ
এদিকে ওদিকে ঘোরে, উর্দিপরা কিম্বা
সাদা পাঞ্জাবি স্নিকার খাবলা মেরে
পঙ্গু করবে শেষ বিকেলে। বিশ্রাম
শব্দটা কি ভিনদেশি লাতিন!

(৬)

চুকচুক করে জিভ বার করে ফাটা
ঠোঁট চাটে ভয়াল চন্দ্রবোড়া, মাঠের
জরাগ্রস্ত আলে বিষ ছড়িয়ে পড়ে
নীল অক্ষরে। চাবির গোছা বেঁধে
কখন যেন মিলিয়ে গেছে আউল ফকির।